মঙ্গলবার , ১৭ জুন, ২০২৫ | ৩ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:৩৬ ৩১ অক্টোবর ২০২৪
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থেকে জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যাসহ নানা কর্মকান্ডে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের তথ্য-উপাত্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিতর্কিত এই ব্যক্তিদের ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে না দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় পৌষ্য কোটায় ভর্তির শর্ত শিথিলের প্রতিবাদও করেন তারা।
বুধবার ( ৩০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে এগারোটায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ক্যাম্পাসের বটতলা প্রাঙ্গণ থেকে মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, "নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী, হত্যারসহযোগী ও অপরাধী শিক্ষকদেরকে আমরা ক্লাসরুমে দেখতে চাই না। কারণ তাদের থেকে আমাদের সুশিক্ষা পাওয়ার কোনো অবকাশ নেই। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে সুস্পষ্ট বিবৃতি চাই যে হত্যাকারীর দোসরদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় পা ফেলতে পারবে না। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা সেক্টরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে বসে বিভিন্নভাবে চব্বিশের স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের তলব করার পূর্বে তারা যেন ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে না পারে তার জন্য প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে স্বৈরাচারের দোসর, তাদের সাথে সম্পৃক্ত এবং তাদের পক্ষ নিয়ে যারা কথা বলবে তাদের কাউকে আমরা ছাড় দিতে প্রস্তুত নই।"
এছাড়া তারা আরও বলেন, 'যেটাকে যে যায়গায় রাখা দরকার সেই জায়গায় না রাখার নাম জুলুম। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করে, কোটার মাধ্যমে ভর্তি করিয়ে আমরা তাদের উপর জুলুম করতে পারবো না। আমরা চাই তারা ন্যায় বিচার পাক, ভর্তি পরীক্ষায় যারা পাশ করে তারাই শুধু ভর্তি হবে। তাই ইবিতে কোনো কোটা থাকবে না। এছাড়া সমাজে বৈষম্য দূরীকরণে অন্যতম বাঁধা হলো কোটা। সেই কোটার আমরা বিলীন চাই। এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে মুক্ত জ্ঞান চর্চার আঁতুড়ঘর। সেখানে ফেল করা বা কোটার মাধ্যমে জোর করে ভর্তি করানোর কোনো অবকাশ নাই।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন দমনে সাবেক সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার কর্তৃক ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হত্যা, গণহত্যা, আটক, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত কাজে সহায়তার জন্য তথ্য চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিঠির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত কমিটি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্য- উপাত্ত সংগ্রহ করে। গঠিত কমিটি অন্তত ১৬টি সংযুক্তিতে আন্দোলনে বিরোধিতা, আন্দোলন নস্যাৎ করার লক্ষ্যে কর্মকান্ড, আন্দোলনকারীদের নির্যাতন, হুমকিসহ নানা অভিযোগে দুই শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ উল্লেখ করে তালিকা পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে কমিটি এসব ঘটনার ছবি, ভিডিও ফুটেজসহ অন্যান্য ডকুমেন্ট একত্রিত করে তদন্ত সংস্থায় প্রেরণ করেছেন।
বিজ্ঞাপন