পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনায় চরমে ভারত, এবার সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ!

পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনায় চরমে ভারত, এবার সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ!

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৮:২৭ ৩ মে ২০২৫

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উত্তেজনা তুঙ্গে। এর মধ্যেই কড়া পদক্ষেপ নিল ভারত সরকার—শুক্রবার (২ মে) থেকে পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দিল্লি।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক সরকারি আদেশে জানায়, পাকিস্তানে উৎপাদিত বা দেশটি থেকে রপ্তানিযোগ্য কোনো পণ্য ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারবে না। আদেশটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়। এনডিটিভির বরাতে বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননীতির স্বার্থেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এ নিষেধাজ্ঞা কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে শিথিল করতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি প্রয়োজন হবে বলেও উল্লেখ রয়েছে সরকারি নথিতে।

পেহেলগাম হামলা ঘিরেই উত্তেজনার সূত্রপাত
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের বহনকারী একটি বাসে সশস্ত্র হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন। ভারত দাবি করে, এ হামলার পেছনে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে। যদিও ইসলামাবাদ সেই অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলে, ভারত এখনও কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি।

একটার পর একটা পাল্টা পদক্ষেপ
পেহেলগাম হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক দ্রুত অবনতির দিকে যায়। ভারত প্রথমে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে, পরে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে দেয় এবং ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত পথ বন্ধ করে দেয়।

পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান হুমকি দেয়, তারা ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করতে পারে। শিমলা চুক্তি বাতিলের ইঙ্গিত দেয় এবং ভারতীয়দের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেয়। এমনকি ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত বাণিজ্য পথটিও বন্ধ করে দিয়েছে ইসলামাবাদ।

আকাশপথ ও সীমান্তেও উত্তেজনা
দুই দেশই একে অপরের উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখায় উভয় পক্ষ সেনা মোতায়েন ও গোলাগুলিতে জড়িয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখা ঘেঁষে সম্পূর্ণ মাত্রার সামরিক মহড়া চালিয়েছে। এর ঠিক পরদিনই ভারত ঘোষণাটি দেয়, যা পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করেছে।

যুদ্ধের শঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতা
পাকিস্তান সরকারের দাবি, ভারতের কাছে এমন 'বিশেষ গোয়েন্দা তথ্য' রয়েছে, যার ভিত্তিতে তারা শিগগিরই সামরিক অভিযান চালাতে পারে। অন্যদিকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টানা দুইদিন নিজের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সামরিক বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে ‘প্রয়োজন অনুযায়ী জবাবদিহির পূর্ণ স্বাধীনতা’।

পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের এমন উত্তেজনায় দক্ষিণ এশিয়া জুড়েই ছড়িয়ে পড়েছে চরম উদ্বেগ। যুদ্ধ সম্ভাবনা এড়াতে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিজ্ঞাপন