বুধবার , ০৭ মে, ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৩:০৪ ৭ মে ২০২৫
শিশুদের কান্না, মায়েদের আহাজারি, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া জীবনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে উদ্ধারকর্মীরা—পাকিস্তানের মাটিতে সোমবার রাতটা ছিল এক বিভীষিকাময় অধ্যায়। ভারতের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮ জন, আহত হয়েছেন আরও ৩৫ জন। নিখোঁজ রয়েছেন দু’জন।
কাশ্মীর সীমান্তের কাছাকাছি থাকা একাধিক অঞ্চলে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভারতের দাবি, তারা ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে পাকিস্তানের দাবি, হামলা হয়েছে পাঁচটি বেসামরিক স্থানে। ভারতীয় বাহিনীর জবাবে বহু নিরীহ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের।
সামরিক শক্তির পাল্টা শক্তি প্রদর্শনে পিছিয়ে থাকেনি পাকিস্তানও। দাবি করা হয়েছে, তারা ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। তবে ভারতের তরফে এই বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, “এই হামলায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই নিরীহ বেসামরিক মানুষ। বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে, অনেকে গৃহহীন। দুইজনের খোঁজ মিলছে না এখনও।”
কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল যে সন্ত্রাসী হামলায় ২২ জন ভারতীয় পর্যটক নিহত হন, তার জন্য দায়ী করা হচ্ছিল পাকিস্তানকে। সেই ঘটনার পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দুই দেশের মধ্যে।
এদিকে, ভারত বলছে, এই হামলা কোনো সামরিক ঘাঁটির উপর নয় বরং জঙ্গি ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে এসব ব্যাখ্যা যেন অর্থহীন। তারা কেবল হারানো স্বজনের ছবি আঁকড়ে ধরে কাঁদছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ কড়া বার্তায় বলেছেন, “পাকিস্তান এই আগ্রাসনের জবাব দেবে। আমাদের শান্তিপ্রিয়তা দুর্বলতা নয়।”
সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা এখন চরম আতঙ্কে। স্কুল-কলেজ বন্ধ, বাজার খালি, রাস্তায় সেনা টহল। রাতভর মানুষের চোখে ঘুম নেই—কে জানে আবার কখন কোথায় বোমা পড়বে!
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এই সংঘর্ষে কাঁপছে গোটা দক্ষিণ এশিয়া। সাধারণ মানুষের কণ্ঠে এখন একটাই প্রশ্ন—"আর কত প্রাণ গেলে শান্তি ফিরবে?"
বিজ্ঞাপন