মঙ্গলবার , ১৭ জুন, ২০২৫ | ৩ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:১২ ১৪ জুন ২০২৫
ইরানে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, যার ফলে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০০ জন। শুক্রবার (১৩ জুন) ভোর ৪টার দিকে তেহরানসহ অন্তত ৮টি শহরে একযোগে এই হামলা চালায় ইসরায়েলের বিমানবাহিনী (IAF)। ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হামলায় ইরানের অন্তত ১০০টিরও বেশি সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি এবং দেশটির সামরিক বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই অপারেশনের নাম দিয়েছে ‘দ্য রাইজিং লায়ন’, যা তারা দাবি করছে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে গৃহীত হয়েছে। ইরান কর্তৃপক্ষ এই হামলাকে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলছে এবং এর কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এরইমধ্যে ঘটনার পরদিন রাতে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ নামে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে। এতে ইসরায়েলে একজন নিহত এবং অন্তত ৪১ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক ভিডিওবার্তায় ইরানের জনগণের প্রতি বিদ্রোহ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন,“গত কয়েক দশক ধরে যে অশুভ ও নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী আপনাদের ঘাড়ে চেপে বসে আছে, তাদেরকে নামানোর সময় এসেছে। আপনারা আপনাদের পতাকা এবং ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের ছায়াতলে আসুন। নিপীড়নবাদী শাসন থেকে মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হোন, আওয়াজ তুলুন। যে সুযোগ আপনাদের সামনে এসেছে, তাকে গ্রহণ করুন।”
তিনি আরও বলেন,“ইরানে আমরা যে সামরিক অভিযান শুরু করেছি, তা সেখানকার জনগণের বিরুদ্ধে নয়। আমাদের সামরিক অভিযান ইরানের পরমাণু হুমকি ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির বিরুদ্ধে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই যুদ্ধোপম পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে এবং এর প্রভাব আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রতিফলিত হবে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং রাশিয়া ইতোমধ্যে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন