রবিবার , ১০ আগস্ট, ২০২৫ | ২৬ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৩:৩১ ২ আগস্ট ২০২৫
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিতে যাচ্ছে কম্বোডিয়া। দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী সান চানথল শুক্রবার (১ আগস্ট) এক ঘোষণায় এ তথ্য জানান।
কম্বোডিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ফ্রেশ নিউজ-এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সান চানথল বলেন, “কম্বোডিয়ার নাগরিক হিসেবে আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে, যিনি সত্যিকার অর্থেই ‘শান্তির প্রেসিডেন্ট’। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব করছি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হোক।”
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘর্ষ ও ট্রাম্পের ভূমিকা
গত কয়েক সপ্তাহে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে পাল্টাপাল্টি বিমান হামলা ও রকেট নিক্ষেপে উত্তেজনা চরমে ওঠে। সীমান্তবর্তী এলাকায় পাঁচ দিন ধরে সংঘর্ষ চলে, যাতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
তবে ২৮ জুলাই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এর আগে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আয়োজিত এক শান্তি বৈঠকে উভয় পক্ষ হামলা বন্ধে একমত হয়। এই চুক্তির পেছনে বড় ভূমিকা ছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।
সংঘাতের শুরুতেই তিনি থাই ও কম্বোডিয়ান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন—যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক হুমকির মুখে পড়বে। পরবর্তীতে দুই নেতার সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করে তিনি যুদ্ধবিরতির পথ সুগম করেন।
সংঘর্ষ-পরবর্তী পদক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
শুক্রবার দুই দেশের কূটনীতিকরা সাংবাদিক ও বিদেশি প্রতিনিধিদের নিয়ে সীমান্ত এলাকায় সফর করেন এবং হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেন। আগামী সপ্তাহে মালয়েশিয়ায় দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে সীমান্ত নির্ধারণ সংক্রান্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
কম্বোডিয়ার এই মনোনয়নের আগেও আন্তর্জাতিকভাবে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য সমর্থন জানানো হয়েছে। গত জুন মাসে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকেও ট্রাম্পকে মনোনয়নের ঘোষণা দেওয়া হয়। তখন পাকিস্তান ও এক প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষে তার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। জুলাই মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-ও ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিতে চান বলে জানান।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্কিত হলেও মধ্যস্থতায় সাফল্য
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বরাবরই বিতর্কিত হিসেবে পরিচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক সংকটে মধ্যস্থতার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তি স্থাপনে ভূমিকা রেখে আলোচনায় এসেছেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই সংঘাত নিরসনের ক্ষেত্রে তার সক্রিয় ভূমিকায় কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে এই মনোনয়ন উদ্যোগ তাকে আবারও শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা এক নেতার মর্যাদা এনে দিয়েছে।
বিশ্ববাসী এখন তাকিয়ে রয়েছে আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং নোবেল কমিটির সিদ্ধান্তের দিকে—এমন একটি সময় যখন ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিজ্ঞাপন