পঞ্চগড়ে সাবেক মন্ত্রী ও এমপি-ডিসি-এসপিসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

পঞ্চগড়ে সাবেক মন্ত্রী ও এমপি-ডিসি-এসপিসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়
জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়

প্রকাশিত: ০৩:৩৬ ৭ মে ২০২৫

পঞ্চগড় জেলা বিএনপির নেতা আব্দুর রশিদ আরেফিন হত্যার ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (আমলি আদালত-১) মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে এজাহারভুক্ত করার জন্য সদর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ মামলায় বাদী হিসেবে রয়েছেন নিহত আরেফিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার। তিনি গত সোমবার (৫ মে) আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মোট ১৫৪ জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে প্রধান আসামি করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাটকে। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন পঞ্চগড়-১ ও ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন, নাঈমুজ্জামান মুক্তা ও মজাহারুল হক প্রধান, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখ, তৎকালীন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম, তৎকালীন পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, এস এম শফিকুল ইসলাম, সদর থানার তৎকালীন ওসি আব্দুল লতিফসহ আরও অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, পৌর কাউন্সিলর ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।

এছাড়া মামলায় আরও ৪০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল ওহাব গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশে মামলাটি এখন তদন্তের আওতায় আসবে এবং সদর থানা পুলিশ এটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করবে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় বিএনপির ঘোষিত সরকার বিরোধী গণমিছিল চলাকালে পঞ্চগড় শহরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সেই মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও হামলার ঘটনায় অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হন এবং পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী বিএনপি অফিস এলাকায় সংঘর্ষ চরমে পৌঁছায়। সেই সময়ই বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ আরেফিন নিহত হন।

এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের জেলা সভাপতি মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল বলেন, “সেদিন আমাদের সহস্রাধিক নেতাকর্মী শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করছিলেন। হঠাৎ পুলিশ ও সরকারি দলের কর্মীরা মিছিলে হামলা চালায়। টিয়ার গ্যাস ও লাঠিপেটার মধ্যেই আরেফিন নিহত হন।”

তিনি আরও জানান, “এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে আইনি প্রক্রিয়ায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে বলে আমরা আশা করি।”


খাদেমুল ইসলাম/এম এন পি

বিজ্ঞাপন