ছাত্র-জনতার ওপর হামলা: চাকরি হারাচ্ছেন ৩৯ চিকিৎসক ও কর্মচারী!

ছাত্র-জনতার ওপর হামলা: চাকরি হারাচ্ছেন ৩৯ চিকিৎসক ও কর্মচারী!

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৭:২৬ ১ জুন ২০২৫

গত বছরের ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র-জনতার ওপর বর্বরোচিত হামলা, শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা, মারামারি, ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৯ চিকিৎসক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত (ডিসমিস) করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এছাড়া, একই ঘটনায় অভিযুক্ত আরও ৯ চিকিৎসক ও একজন কর্মচারীকে তিরস্কারসহ সতর্ক করা হয়েছে।

শনিবার (৩১ মে) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। সভায় উপস্থাপিত তদন্ত প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ৮(ক)(২) ধারায় গঠিত তদন্ত কমিটি এই প্রতিবেদন জমা দেয়।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত ১৫ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অধ্যাদেশের ৫ (ঘ, ঝ, ট) ধারায় প্রমাণিত হওয়ায় ৬ (ঠ) ধারায় চাকরিচ্যুত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১৯ জন সরাসরি হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ থাকায় তাদেরও একই শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।

সিন্ডিকেট সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, এডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ৯৬ কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করা হবে এবং ২২ কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

ঘটনার প্রেক্ষাপট অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার পাশাপাশি ব্যাপক ভাঙচুর, মারামারি ও গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করে। এরপর বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য ৮(ক)(২) ধারা অনুযায়ী আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, "তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাদের তদন্ত এখনও বাকি, তদন্ত শেষ হলে তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

এই সিদ্ধান্তের ফলে পবিত্র ঈদুল আজহার পূর্বমুহূর্তে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক, শিক্ষক ও কর্মচারী চাকরি হারালেন। বিষয়টি শিক্ষক ও কর্মচারী মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সহিংসতার দায় নিরসনে তারা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে।

বিজ্ঞাপন