সোমবার , ১১ আগস্ট, ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৭:২৩ ৫ আগস্ট ২০২৫
জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক আবেগঘন ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই ভাষণে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—এবারের নির্বাচন হোক শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর ও গণতন্ত্রের এক উজ্জ্বল নিদর্শন।
ড. ইউনূস বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাব, যেন নির্বাচন কমিশন আগামী রমজানের আগে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, এই নির্বাচন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এক মাইলফলক হোক। সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।”
ভাষণে তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন—এই নির্বাচন যেন শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য না হয়ে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক উৎসবে পরিণত হয়। ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে এটি দেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় নির্বাচন হয়ে থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক প্রস্তুতি আজ (বুধবার) থেকেই শুরু হবে। তিনি বলেন, “সকল স্তরের মানুষকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, যেন সবাই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয় এই মহা আয়োজনের জন্য।”
ভাষণে তিনি প্রবাসী ভোটারদের কথাও স্মরণ করেন। বলেন, “এই প্রথমবার আমরা চাই প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে। তারা আমাদের জাতীয় উন্নয়নের অংশীদার—তাদের অংশগ্রহণ জরুরি।”
ভাষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও আবেগঘন অংশ ছিল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। তিনি বলেন, “গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে যারা শহীদ হয়েছেন, আমি তাঁদের স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে। ছাত্র, শ্রমিক, নারী—সবাই বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের এই আত্মত্যাগই আজ আমাদের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক চেতনাকে আবার জাগ্রত করেছে। যারা পঙ্গু হয়েছেন, চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন—তাঁদের প্রতি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
শেষে ড. ইউনূস বলেন, “দেশের মানুষ যেন নিজেদের ভাগ্য গড়ার সুযোগ পায়, নিজেদের সরকার নিজেরা নির্বাচন করতে পারে—এটাই আমাদের লক্ষ্য। এই পথচলায় আপনারা সবাই দোয়া করবেন, সহযোগিতা করবেন, যাতে আমরা একসঙ্গে গড়ে তুলতে পারি একটি মানবিক, ন্যায়ভিত্তিক ও স্বপ্নময় বাংলাদেশ।”
বিজ্ঞাপন