বুধবার , ১৩ আগস্ট, ২০২৫ | ২৯ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৪:১৯ ১৩ আগস্ট ২০২৫
সিন্ধু নদের পানি স্থায়ীভাবে আটকে রাখার পরিকল্পনা নিলে ভারতকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ইসলামাবাদে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
শেহবাজ বলেন, “আমি শত্রুদের স্পষ্টভাবে জানাতে চাই— আমরা আমাদের পানির এক ফোঁটাও কাউকে ছিনিয়ে নিতে দেব না। যদি আপনারা আমাদের পানি আটকে রাখার পরিকল্পনা করেন এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেন, তবে আমরা আপনাদের এমন শিক্ষা দেব যে সারাজীবন মনে রাখবেন।”
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সিন্ধু নদের পানি বণ্টন নিয়ে উত্তেজনা নতুন নয়। গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে। এর ফলে পাকিস্তানের তিন নদী—সিন্ধু, চেনাব ও ঝিলামের প্রবাহ কমে গিয়ে কৃষি উৎপাদন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে।
ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে মামলা করে। চলতি মাসের ৮ আগস্ট দেওয়া রায়ে আদালত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি সচল করা এবং ভারতকে চুক্তিতে ফেরার নির্দেশ দেয়। আদালত আরও নির্দেশ দেন, নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করতে হলে ভারতকে অবশ্যই চুক্তির শর্ত মেনে চলতে হবে।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনিরও সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরে একই ধরনের কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, “আমরা বাঁধ শেষ হওয়ার অপেক্ষা করব, তারপর ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র মেরে ধ্বংস করে দেব।” শেহবাজের সর্বশেষ মন্তব্য সেনাপ্রধানের সেই হুঁশিয়ারিরই প্রতিধ্বনি।
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় হওয়া সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী, পশ্চিমাঞ্চলের তিন নদী—সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাবের অধিকাংশ পানি ব্যবহারের অধিকার পাকিস্তানের, আর পূর্বাঞ্চলের তিন নদী—ইরাবতী, বিপাশা ও শতদ্রুর পানি ব্যবহারের অধিকার ভারতের। এই চুক্তি কোনো পক্ষ একতরফাভাবে বাতিল বা স্থগিত করতে পারে না।
পাকিস্তানের কৃষি, শহর ও জ্বালানি ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণভাবে এই পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলোর নিশ্চিত প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল, যার বিকল্প বর্তমানে দেশটির হাতে নেই।
বিজ্ঞাপন