Sorry, you have been blocked

You are unable to access thailand-u31.com

Why have I been blocked?

This website is using a security service to protect itself from online attacks. The action you just performed triggered the security solution. There are several actions that could trigger this block including submitting a certain word or phrase, a SQL command or malformed data.

What can I do to resolve this?

You can email the site owner to let them know you were blocked. Please include what you were doing when this page came up and the Cloudflare Ray ID found at the bottom of this page.

‘বাবা নেই নাকি বেঁচে আছেন—নিখোঁজ সন্তানের অশেষ প্রতীক্ষা’

‘বাবা নেই নাকি বেঁচে আছেন—নিখোঁজ সন্তানের অশেষ প্রতীক্ষা’

‘বাবা নেই নাকি বেঁচে আছেন—নিখোঁজ সন্তানের অশেষ প্রতীক্ষা’

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৬:৪৬ ৩০ আগস্ট ২০২৫

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে ‘গুম’ শব্দটি এক ভয়াবহ বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, ভিন্নমতের মানুষ, এমনকি সমালোচকদেরও হঠাৎ করেই নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা প্রায় নিয়মিত হয়ে উঠেছিল। কারও লাশ মিলেছে, কারও সম্পর্কে আজও কোনো তথ্য নেই।

গুম ও নিখোঁজের হিসাব

গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে অন্তত ৩০০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের জীবিত ফেরার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। ইতোমধ্যেই ১ হাজার ৭০০টিরও বেশি অভিযোগ কমিশনের কাছে এসেছে। এর মধ্যে অনেক অভিযোগের এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।

কমিশনের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,

“নিখোঁজ ব্যক্তিদের অধিকাংশেরই ১০ থেকে ১৪ বছর ধরে কোনো খোঁজ নেই। আইন অনুযায়ী ৭ বছর নিখোঁজ থাকলে ধরে নেওয়া যায় ব্যক্তি আর জীবিত নেই। তারপরও আমরা তাঁদের খুঁজে পাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”

পরিবারগুলোর অশেষ অপেক্ষা

প্রতিটি নিখোঁজ পরিবার যেন এক অশেষ অপেক্ষার যন্ত্রণায় বন্দি। কারও কারও মনে এখনো একটুখানি আশার আলো জ্বললেও অধিকাংশ পরিবারই মনে করছে তাঁদের প্রিয়জন হয়তো আর বেঁচে নেই।

২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর লাকসামের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম হিরু এবং পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির পারভেজকে তুলে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তাঁদের আর কোনো খোঁজ নেই।

হুমায়ুন কবিরের ছেলে শাহরিয়ার রাতুল প্রথম আলোকে বলেন,

“বাবা নেই—এটা আমি আজও মানতে পারি না। কিন্তু যদি জানতে পারতাম তিনি আর বেঁচে নেই, তাহলে অন্তত তাঁর কবরের কাছে গিয়ে দোয়া পড়তে পারতাম।”

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী ও তাঁর গাড়িচালক আনসার আলী গুম হন। দীর্ঘ ১২ বছরেও তাঁদের কোনো সন্ধান মেলেনি। ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা বলেন,

“তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, একটি বিশেষ বাহিনী এর সঙ্গে জড়িত ছিল। কিন্তু এখনো কোনো সত্য জানা যায়নি। আমরা কেবল ন্যায়বিচার চাই।”

আওয়ামী লীগ আমলের গুমের ধরণ

কমিশনের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গুম হওয়া ব্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হয়েছিল—

১. তুলে নিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করা।
২. সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো।
৩. সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে সেখানকার বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া।
৪. অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো।

তখনকার সরকার বরাবরই এ ধরনের ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। উল্টো ভুক্তভোগীদের আত্মগোপনে থাকা বা পাওনাদারের ভয়ে পালিয়ে থাকার অভিযোগ তুলে পরিবারগুলোকেই হেয় করা হয়েছে।

কমিশনের চার দিকের উদ্যোগ

বর্তমানে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে চার দিক থেকে চেষ্টা করছে—

  • পুলিশের মাধ্যমে নিখোঁজদের খোঁজ করা।
  • সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান।
  • ভারতের কারাগারে বাংলাদেশি বন্দীদের তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা।
  • সীমান্ত দিয়ে ‘পুশ ইন’ হওয়া ব্যক্তিদের যাচাই।

তবে এতসব উদ্যোগের পরও এখনো কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি।

নতুন মামলা ও তদন্ত

আইজিপি বাহারুল আলম জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ আমলে যেসব ঘটনায় মামলা হয়নি, এখন সেগুলো অপহরণের মামলা হিসেবে রেকর্ড হচ্ছে। কমিশন ইতিমধ্যেই ১৬০টি ঘটনা পুলিশের কাছে পাঠিয়েছে।

আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস

আজ ৩০ আগস্ট পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস। গত বছর ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করে। এর দুদিন আগে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গুমের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন করে।

এক দীর্ঘশ্বাসের গল্প

বাংলাদেশে গুম এখন শুধু একটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নয়, বরং হাজারো পরিবারের দুঃসহ স্মৃতি ও অশেষ প্রতীক্ষার নাম। যেসব পরিবার এখনো তাঁদের প্রিয়জনের অপেক্ষায় আছেন, তাঁদের সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা হলো— “যদি প্রিয়জন বেঁচে না থেকেও থাকেন, অন্তত কবরের কাছে গিয়ে দোয়া পড়তে পারি।”

 

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/