সোমবার , ১১ আগস্ট, ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:৪৮ ৩ মে ২০২৫
দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তে যিনি ভেবেছেন দেশের কথা, সেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা একদিন পিছিয়ে গেল। এখন তিনি ৫ মে নয়, ৬ মে মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন।
চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠজন ও বিএনপির মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, চিকিৎসক ও দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একান্ত ব্যক্তিগত ও নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট কিছু উদ্বেগ থেকেই তার যাত্রা একদিন পিছিয়ে যাচ্ছে।
বেগম জিয়া কাতারের আমিরের সৌজন্যে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডন ছাড়বেন। দীর্ঘ চিকিৎসা, ক্লান্তি, এবং পরিবার ছেড়ে আবার দেশের মাটিতে ফেরার প্রস্তুতি—সবকিছু মিলিয়ে তার এই যাত্রা অনেক বেশি আবেগের।
২০১৮ সালের সেই ধূসর দিনগুলোতে যখন দুর্নীতির মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়, তখন কেউ জানত না, কতদিন লাগবে তার মুক্তি আসতে। করোনা মহামারির ভয়াবহ সময়েও তিনি ছিলেন কার্যত গৃহবন্দি। আর আজ, সময় বদলেছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে তিনি পেয়েছেন মুক্তি। আদালত বাতিল করেছে তার বিরুদ্ধে থাকা মামলার রায়। এসবের পর, নতুন এক প্রেক্ষাপটে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লন্ডনে নেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে গত জানুয়ারির ২৫ তারিখে তিনি পুত্র তারেক রহমানের বাসায় যান। ছয় বছরের বেশি সময় পর প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিয়েছেন তিনি—একটি দীর্ঘ বিরতির পর।
এদিকে তার দেশে ফেরার প্রস্তুতির মধ্যেই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত খবর উঠে আসে। ৫ মে’র ফ্লাইটে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই কেবিন ক্রুকে মধ্যরাতে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিমানের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগেই এমন সিদ্ধান্ত।
সব মিলিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বেগম জিয়া। তার দল, তার অনুসারীরা এখন প্রস্তুত তাকে বরণ করে নিতে। হয়তো অনেকের কাছেই এটি শুধুই একটি প্রত্যাবর্তন—কিন্তু যারা তাকে কাছ থেকে চেনেন, জানেন, এই ফেরা কেবল ব্যক্তিগত নয়, এক দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াইয়ের আবেগঘন অধ্যায়।
বিজ্ঞাপন