মঙ্গলবার , ১৭ জুন, ২০২৫ | ৩ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:২৫ ৭ নভেম্বর ২০২৪
২০২০ সালে বাফুফের নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে দুই প্রার্থীর সমান ভোট হওয়ায় পুন: নির্বাচনে তাবিথ আউয়াল সামান্য ব্যবধানে হেরে যান। নিজের অবস্থানে অটল থেকেছেন তাবিথ। সেই হারের পর আর কখনো বাফুফে ভবনে পা রাখেননি তিনি। বাফুফে ভবনে গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, 'মনে হচ্ছে নিজের বাসায় ফিরলাম।'
২৬ অক্টোবর সভাপতির আসনে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হয়ে ফিরলেন তাবিথ। গতকাল বাফুফের নির্বাচিত কমিটির কোনো সভা ছিল না। ৯ নভেম্বর প্রথম সভা। নির্বাচনের পর প্রথমবার সবার সঙ্গে দেখা এবং বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল নেপাল থেকে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরেছে বলে তাদেরকেও অভিনন্দন জানাতে দুই-এক জন ছাড়া কমিটির কর্মকর্তারা হাজির হয়েছিলেন। তাবিথ তরুণ এবং উচ্ছল। একসময় ফুটবল খেলতেন, ১৩ নম্বর জার্সি গায়ে ক্লাব ফুটবলে খেলেছেন। ধনীর সন্তান হয়েও তিনি ক্লাবের অনুশীলনে সময় জ্ঞান মেনে চলতেন, শৃঙ্খল থাকতেন।
বাফুফের বস হয়েও তিনি শৃঙ্খলা মেনে চলতে চান। প্রথম দিনেই বাফুফের ক্লিনার থেকে শুরু করে বেতনভুক্ত শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জিরো টলারেন্স জানিয়ে দিয়েছেন। বাফুফের ছাদের নিচে বসে বাফুফের বিরুদ্ধে কাজ করলে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। সর্বস্তরের কর্মচারী কর্মকর্তাকে পরিষ্কার ভাষায় শৃঙ্খলা মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে তাবিথ জানিয়ে দিলেন 'প্রশ্ন করুন কিন্তু উত্তর দিতে বিরত থাকতে পারি।' নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল দেশের ফুটবল উন্নয়নে যা কিছু করবেন তা সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চান। স্বপ্নবাজ ছেলে তাবিথ দেশের ফুটবলকে ভালো জায়গায় নিতে চান। ফানুস উড়াতে চান না।
বাফুফের নবনির্বাচিত কমিটি সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী ফুটবল দলকে তিন তলায় ডেকে কথা বলেছে। সবার পক্ষ থেকে সভাপতি অভিনন্দন জানিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন ফুটবলারদের পুরস্কার দেবে বাফুফে। তবে ঘোষণা দেওয়া হয়নি। বাফুফের সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বাফুফের গত মেয়াদে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে সেটি নিয়ে এখন কোনো মন্তব্য করতে চান না তাবিথ। আগে কাজ শুরু করতে চান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এমনিতেই সব জানা হবে।
নতুন সভাপতি তাবিথ যখন বাফুফে ভবনে প্রবেশ করেন, অন্যরা তখন দোতলায়। নতুন সভাপতিকে বরণ করতে দেখা যায়নি, নিচে নেমে নতুন সভাপতিকে প্রথম দিন অভ্যর্থনা জানানোটা সাধারণ সৌন্দর্য এবং তা শিষ্টাচারের মধ্যেও পড়ে। কিন্তু প্রথম দিনেই কোথায় যেন গলদ চোখে পড়ল। টিভি ক্যামেরার ফ্রেমে ফুটবলের নতুন বসের পাশে দাঁড়ালেন আমিরুল ইসলাম বাবু, আর সিঁড়ির মাঝপথে সহ-সভাপতি সাব্বির আহমেদ আরেফ হাত মিলিয়ে অভিনন্দন জানিয়ে তাবিথকে ওপরে নিয়ে গেলেন।
কেন অন্যরা দূরেই থাকলেন, বোঝা গেল না। দৃষ্টিকটু পরিস্থিতি দেখেও ভুলে গেলেন বাংলাদেশের ফুটবল বস। তারপরও সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে তাবিথ জানিয়ে গেলেন, কমিটির সবাইকে এক সুতোয় মালা গেঁথে ফুটবল উন্নয়নে এগিয়ে যেতে চান তিনি। বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল কোরিয়ায় এএফসির কংগ্রেসে, তখন সাফ নারী চ্যাম্পিয়নরা ছাদ খোলা বাসে দেশে ফিরলে খেলোয়াড়দেরকে অভিনন্দন জানাতে এবং ১ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা দিতে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া বাফুফেতে গিয়ে দেখেন তাকে অভ্যর্থনা জানানোর কেউ নেই। কর্মকর্তা বলতে সহ-সভাপতি আরেফ দাঁড়িয়েছেন। যারা দেশে অথচ প্রটোকলে রয়েছে, সভাপতি দেশে না থাকলে তার বদলে কে দায়িত্ব পালন করবেন। এটি নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা বাফুফের ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন