Sorry, you have been blocked

You are unable to access thailand-u31.com

Why have I been blocked?

This website is using a security service to protect itself from online attacks. The action you just performed triggered the security solution. There are several actions that could trigger this block including submitting a certain word or phrase, a SQL command or malformed data.

What can I do to resolve this?

You can email the site owner to let them know you were blocked. Please include what you were doing when this page came up and the Cloudflare Ray ID found at the bottom of this page.

“আয় আমার, করও আমার—ভয়কে পুঁজি করে ব্যবসা নয়, নাগরিক দায়িত্বই হোক অগ্রাধিকার”

“আয় আমার, করও আমার—ভয়কে পুঁজি করে ব্যবসা নয়, নাগরিক দায়িত্বই হোক অগ্রাধিকার”

“আয় আমার, করও আমার—ভয়কে পুঁজি করে ব্যবসা নয়, নাগরিক দায়িত্বই হোক অগ্রাধিকার”

মোরনিউজ ডেস্ক
মোরনিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫:৫১ ২৫ আগস্ট ২০২৫

আয় আপনার, করও আপনার। অথচ দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা অনেকেই পিছিয়ে পড়ি। কর দেওয়া তো দূরের কথা, আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রক্রিয়াতেও অনেকে ভয় পান। দীর্ঘদিন ধরে আয়কর দাখিল মানেই ছিল জটিল প্রক্রিয়া, অসংখ্য ফর্ম পূরণ, দফতর ঘুরে বেড়ানো এবং প্রায়শই কর পরামর্শকদের ওপর নির্ভরশীলতা। কিন্তু সময় বদলেছে। সরকার আজ কর দাখিল প্রক্রিয়াকে সহজীকরণ করেছে, অনলাইন সেবা চালু করেছে। ঘরে বসে সহজেই রিটার্ন দাখিল করা সম্ভব। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব এবং একটি শ্রেণির বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা এই ইতিবাচক পরিবর্তনকে বাধাগ্রস্ত করছে।

ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ (এনবিআর)-এর তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত দেশে প্রায় ১ কোটি ১৪ লাখ টিআইএনধারী (TIN holder) থাকলেও রিটার্ন দাখিল করেছেন মাত্র ৩৯.৮৬ লাখ করদাতা—অর্থাৎ প্রায় ৩৫ শতাংশ অংশগ্রহণ। ইতিবাচক দিক হলো, অনলাইনে রিটার্ন দাখিলে বিপুল অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যেখানে মাত্র ৫.২৭ লাখ রিটার্ন অনলাইনে জমা পড়েছিল, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭.১২ লাখে—যা ২২৫ শতাংশ বৃদ্ধি। তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে—অনলাইনে জমা দেওয়া রিটার্নের মধ্যে প্রায় ১০ লাখই শূন্য আয়ের রিটার্ন। এটি প্রমাণ করে যে অনেকেই শুধু আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করছেন, প্রকৃত কর পরিশোধে অনাগ্রহী রয়ে গেছেন।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কিছু ট্যাক্স প্র্যাকটিশনার ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। তারা নানা অযাচিত জটিলতার কথা বলে করদাতাদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। যেন সরকার আয়কর প্রক্রিয়া সহজ করায় তাদের ব্যবসা হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে সাধারণ করদাতারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন, নিজের রিটার্ন নিজে দাখিল করতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এর প্রভাব ব্যক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়; রাষ্ট্রও এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কর আদায় কমে গেলে উন্নয়ন ব্যাহত হয়, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও ঝুঁকির মুখে পড়ে।

তাহলে প্রশ্ন হলো, কেন আমরা নিজেদের কর নিজেরাই দাখিল করতে পারি না? উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। কানাডায় প্রায় ৯০ শতাংশ করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৩ শতাংশ করদাতা নিজে অনলাইন সফটওয়্যার ব্যবহার করেন, যদিও মাত্র ১৩ শতাংশ সম্পূর্ণ নিজেরা রিটার্ন দাখিল করেন। এই স্বনির্ভরতা তাদের কর ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও দক্ষ করেছে। প্রযুক্তির সাহায্যে কয়েক মিনিটেই তারা রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। আর আমরা? এখনও অনেকটা গুজবনির্ভর, ভয়ভীতির আবর্তে আটকে আছি।

সরকারের কর দাখিল সহজীকরণ উদ্যোগকে সফল করতে হলে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। আমাদের জানতে হবে, আয়কর রিটার্ন দাখিল করা কোনো দুরূহ কাজ নয়। এনবিআর-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করলেই যেকোনো মানুষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। এতে কোনো প্রকার ঝুঁকি বা জটিলতা নেই। বরং এর মাধ্যমে আপনি নিজের আর্থিক তথ্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন, অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়াতে পারবেন এবং কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে সরাসরি অবদান রাখতে পারবেন।

মনে রাখতে হবে, কর দায়িত্ব এড়িয়ে গেলে আপনি শুধু আইন লঙ্ঘন করছেন না, রাষ্ট্রের উন্নয়ন থেকেও নিজেকে বিচ্ছিন্ন করছেন। আপনার প্রদত্ত করেই গড়ে ওঠে সড়ক, সেতু, হাসপাতাল, স্কুল। তাই কর পরিশোধ ও রিটার্ন দাখিল কোনো দয়া নয়; এটি আপনার অধিকার ও দায়িত্ব দুটিই।

সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারেরও করণীয় রয়েছে। অনলাইন দাখিল প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করতে হবে, সহায়তা কেন্দ্রগুলোকে কার্যকর করতে হবে এবং বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জনগণের কাছে স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দিতে হবে—কর দাখিল কঠিন নয়, বরং এটি উন্নত নাগরিকত্বের পরিচায়ক।

আমরা যদি নিজেদের কর নিজেরাই দাখিল করি, তবে শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে নয়, জাতীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারব। আত্মনির্ভরশীলতা বাড়বে, কর প্রশাসনের ওপর চাপ কমবে, স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।

তাই এখনই সময় ভয়ভীতি ত্যাগ করে দায়িত্ব নেওয়ার। মনে রাখতে হবে—আপনার সচেতনতা রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করে, আপনার দায়িত্ব উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে। নিজের আয় নিজেরাই ঘোষণা করুন, অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করুন এবং অন্যকেও অনুপ্রাণিত করুন। উন্নত বিশ্বের পথে এগিয়ে যেতে এটাই আজকের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।  

লেখক: মোঃ সুরুজ আলী - এডিটর & পাবলিশার
মোর নিউজ বিডি 

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/