দক্ষিণি সিনেমার বাজারে নতুন ঝড় তুলেছে পবন কল্যাণ অভিনীত ছবি ‘দে কল হিম ওজি’। মুক্তির আগেই ছবিটি দর্শকের মধ্যে তুমুল আগ্রহ তৈরি করেছিল। আর মুক্তির দিন থেকেই শুরু হয়েছে একের পর এক রেকর্ড গড়ার পালা। বিশেষ করে প্রিমিয়ার ডের আয় দিয়েই ছবিটি ভেঙে দিয়েছে আল্লু অর্জুনের বহুল আলোচিত সিনেমা ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’-এর রেকর্ড।

অগ্রিম বুকিং থেকেই রেকর্ড

মুক্তির আগে থেকেই আলোচনায় ছিল ‘ওজি’। সারা বিশ্বে অগ্রিম বুকিং থেকে ছবিটি আয় করেছে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১১ কোটি টাকা। শুধু ভারতের বাজারেই প্রিমিয়ার শোর অগ্রিম টিকিট বিক্রি থেকে আয় দাঁড়ায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা, যা দক্ষিণি সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক।
অন্যদিকে ‘পুষ্পা ২’ প্রিমিয়ার শো থেকে আয় করেছিল প্রায় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ, প্রায় দ্বিগুণ আয়ে রেকর্ড ভাঙতে সফল হয়েছে পবনের সিনেমা।

মুক্তির প্রথম দিনেই চমক

অগ্রিম বুকিংয়ের দারুণ সাড়া পাওয়ার পর মুক্তির দিনেও বক্স অফিসে ঝড় তোলে ‘ওজি’। শুধু ভারতে ছবিটির প্রথম দিনের নেট সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
আরও বড় সাফল্য এসেছে উত্তর আমেরিকার বাজার থেকে। সেখানে শুধু প্রিমিয়ার শো থেকেই আয় দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৫ কোটি টাকা—যা কোনো তেলেগু ছবির জন্য এই প্রথম। বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, প্রথম সপ্তাহ শেষে সিনেমাটির আয় ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

গল্প ও অভিনয়শিল্পীরা

সুজিত পরিচালিত এই ছবির কাহিনি ঘুরপাক খেয়েছে গ্যাংস্টার ওজস গম্ভীরার জীবনকে ঘিরে।

পবন কল্যাণ নিজের স্বভাবসিদ্ধ শক্তিশালী উপস্থিতি দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।

নায়িকা হিসেবে আছেন প্রিয়াঙ্কা মোহন।

বলিউড তারকা ইমরান হাশমি এই ছবির মাধ্যমে প্রথমবার তেলেগু ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছেন। তাঁকে দেখা গেছে ভয়ংকর গ্যাংস্টার ‘ওমি ভাউ’ চরিত্রে।

ছবিটি দক্ষিণ ভারতের সব ভাষার পাশাপাশি হিন্দিতেও মুক্তি পেয়েছে। সেন্সর বোর্ড থেকে ছবিটি ‘এ’ সার্টিফিকেট পাওয়ায় দর্শকরা আগে থেকেই জানতেন এটি হবে অ্যাকশন-ভরপুর সিনেমা।

বাজেট বনাম আয়: কোথায় গিয়ে থামবে ‘ওজি’?

মাত্র ৩০ কোটি টাকার বাজেটে তৈরি হলেও, এখন পর্যন্ত সিনেমাটির আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮০ কোটি টাকা। ফলে অনেকেই বলছেন, সামনের দিনগুলোতে আয় ছাড়িয়ে যেতে পারে নতুন রেকর্ডও।

‘পুষ্পা ২’-এর সঙ্গে তুলনা

গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’ মুক্তির প্রথম দিনেই বিশ্বব্যাপী আয় করেছিল প্রায় ৩২০ কোটি টাকা। তবে প্রিমিয়ার শো থেকে আয় ছিল মাত্র ১৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সেদিক থেকেই এগিয়ে গেছে ‘ওজি’।
অর্থাৎ মোট প্রথম দিনের আয়ে ‘পুষ্পা ২’ এগিয়ে থাকলেও, প্রিমিয়ার কালেকশনে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে পবন কল্যাণের ‘ওজি’।

বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রতিযোগিতা দক্ষিণি সিনেমাকে আরও বড় জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্ববাজারে তেলেগু ইন্ডাস্ট্রির অবস্থান আরও শক্ত করছে।

দর্শকের উচ্ছ্বাস আর হলভর্তি ভিড় দেখেই বোঝা যাচ্ছে, ‘ওজি’ দীর্ঘদিন থিয়েটারে হাউসফুল থাকবে। বিশেষ করে বিদেশি বাজারের প্রবল সাড়া আয়কে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।
একই সঙ্গে পবন কল্যাণের জনপ্রিয়তাও পৌঁছাবে এক নতুন উচ্চতায়। বর্তমানে দক্ষিণি সিনেমার শক্তি ও প্রভাব বলিউডকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আর ‘পুষ্পা ২’ এবং **‘ওজি’**র সাফল্যই তার প্রমাণ।

এখন দেখার বিষয়—আর কত রেকর্ড ভাঙতে পারে ‘ওজি’?