ইশরাককে মেয়র মানতে দাবি, অবরুদ্ধ নগর ভবন — বন্ধ ডিএসসিসির সব সেবা

ইশরাককে মেয়র মানতে দাবি, অবরুদ্ধ নগর ভবন — বন্ধ ডিএসসিসির সব সেবা

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৭:৩১ ২৮ মে ২০২৫

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সংস্থাটির একাংশের কর্মচারীরা। গত ১৫ মে থেকে নগর ভবনের মূল ফটকসহ সব বিভাগের গেটে তালা লাগিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে নাগরিক সেবার সব কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। নগর ভবনে এসে সেবা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’ এবং ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মচারীরা নগর ভবনের ভেতরে অবস্থান নিয়ে নিয়মিত মিছিল করছেন। তারা বলছেন, আদালতের রায় এবং নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ইশরাক হোসেনই ঢাকা দক্ষিণ সিটির বৈধ মেয়র। কিন্তু তাকে এখনো শপথ নিতে দেওয়া হয়নি, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মচারী খোরশেদ আলম বলেন, “দুই দফায় কোর্ট রায় দেওয়ার পরও ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা ইশরাককে মেয়র হিসেবে পেতে চাই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” আরেক কর্মচারী জাহিদুর রহমান বলেন, “ঢাকার জনগণ যেমন ইশরাক ভাইকে মেয়র হিসেবে দেখতে চায়, তেমনি ডিএসসিসির সব কর্মচারীরাও তাকে মেয়র হিসেবে চায়। আমাদের মেয়র দায়িত্ব না নিলে আমরা কাজে ফিরবো না।”

আন্দোলনকারীরা প্রতিদিন নগর ভবন প্রাঙ্গণে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের স্লোগানগুলো হচ্ছে— “শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই”, “মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না”, “চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে”।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া ডিএসসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে মামলা করেন। চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু ১৪ মে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয় যাতে ইশরাককে শপথ নিতে না দেওয়া হয়।

সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব ঘটে। এ অবস্থায় ১৫ মে থেকে ইশরাকের সমর্থকেরা আন্দোলনে নামেন। এর ফলে নগর ভবনের কার্যক্রম পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। তবে সম্প্রতি হাইকোর্ট রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন এবং এর পর ইশরাক তার সমর্থকদের আন্দোলন ৪৮ ঘণ্টার জন্য স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন।

এই আন্দোলনের কারণে জনসাধারণ মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন। ডেথ-বার্থ সার্টিফিকেট, ট্রেড লাইসেন্স, ময়লা ব্যবস্থাপনা, কর আদায়সহ সব সেবামূলক কাজ বন্ধ রয়েছে। নগরবাসীর দাবি, দ্রুত এই জটিলতার অবসান ঘটিয়ে সেবা কার্যক্রম সচল করা হোক।

বিজ্ঞাপন