ভারতের হামলার আশঙ্কায় কাশ্মীরে হাজারের বেশি মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা!

ভারতের হামলার আশঙ্কায় কাশ্মীরে হাজারের বেশি মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা!

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৩:৫৩ ২ মে ২০২৫

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান তীব্র সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের এক হাজারের বেশি মাদ্রাসা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ভারতের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের আশঙ্কায়।

গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পর্যটন এলাকা পেহেলগামে ভয়াবহ এক হামলায় অন্তত ২৬ জন প্রাণ হারান, যাদের অধিকাংশই ছিলেন দেশি-বিদেশি পর্যটক। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যেই দেশটির সেনাবাহিনীকে কঠোর জবাব দেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন।

অন্যদিকে পাকিস্তান সরকার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পাল্টা দাবি করেছে যে, ভারতের পক্ষ থেকে একটি সম্ভাব্য সামরিক হামলার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এক টেলিভিশন বিবৃতিতে জানান, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই ভারত হামলা চালাতে পারে বলে গোয়েন্দা সূত্রে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ধর্মবিষয়ক দপ্তরের প্রধান হাফিজ নজির আহমদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা কাশ্মীরের সব মাদ্রাসায় ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছি।’ সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত মানুষ আতঙ্কে নিজেরাই বাংকার নির্মাণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকে মাটির নিচে নিরাপদ আশ্রয় তৈরির জন্য সিমেন্ট দিয়ে মজবুত নির্মাণকাজও চালাচ্ছেন।

চাকোঠি সীমান্ত এলাকার এক দোকানি ইফতেখার আহমদ মির বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা চরম আতঙ্কে আছি। আমাদের সবচেয়ে বড় চিন্তা আমাদের শিশুদের নিরাপত্তা।’

এদিকে কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদসহ বিভিন্ন শহরে জরুরি সেবা সংস্থাগুলো স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে। এসব প্রশিক্ষণে শেখানো হচ্ছে কীভাবে আগুন নেভাতে হয়, কীভাবে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হয় এবং কিভাবে স্ট্রেচারে করে সরিয়ে নিতে হয়।

১১ বছর বয়সী শিক্ষার্থী আলি রেজা বলেন, ‘আমরা এখন জানি বিপদের সময় কী করতে হয়, এবং আহত কাউকে কিভাবে সাহায্য করতে হয়।’

দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা যখন ক্রমেই চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে, তখন এই ধরনের প্রস্তুতি ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ কাশ্মীরবাসীর জীবনে যুদ্ধের বাস্তব ছায়া এনে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন