বৃহস্পতিবার , ০৮ মে, ২০২৫ | ২৫ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৭:২০ ৭ মে ২০২৫
ভারতের আধুনিক যুদ্ধবিমান রাফাল নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে একটি চাঞ্চল্যকর দাবি ঘুরে বেড়াচ্ছে—একটি রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপতিত হয়েছে বলে নানা সূত্রে উল্লেখ করা হচ্ছে। এই ঘটনা যদি সত্য হয়, তবে তা ভারতের প্রতিরক্ষা খাতের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে, এমনকি দেশটির আন্তর্জাতিক সামরিক ভাবমূর্তিতেও নেমে আসতে পারে কালো ছায়া।
২০১৬ সালে ফ্রান্সের দাসোঁ অ্যাভিয়েশন থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করে ভারত। এসব বিমানকে দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার 'গেম চেঞ্জার' বলা হচ্ছিল। বিশেষত চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান সীমান্ত সংঘাতের পটভূমিতে রাফালের উপস্থিতি ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য একটি কৌশলগত শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল।
তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও এবং কিছু অপ্রমাণিত সংবাদসূত্র দাবি করেছে, একটি রাফাল দুর্ঘটনায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা বিমানবাহিনী কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি, যা ঘটনাটিকে আরও রহস্যময় ও উদ্বেগজনক করে তুলছে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি রাফালের মতো উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান এভাবে ভূপতিত হয়ে থাকে, তবে তা ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি ও প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার বাস্তবতা নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন তোলে। এত ব্যয়বহুল এবং উচ্চমানসম্পন্ন বলে বিবেচিত একটি যুদ্ধবিমান যদি প্রযুক্তিগত বা মানবিক ত্রুটিতে ধ্বংস হয়, তবে তার পেছনে যে বিপুল আর্থিক ও কৌশলগত বিনিয়োগ ছিল, তা প্রশ্নের মুখে পড়ে।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক পরিসরেও প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠতে পারে। যদি দাসোঁ অ্যাভিয়েশন নিজেই এই ভূপতনের দায় স্বীকার করে বা এর প্রযুক্তিগত ত্রুটির কথা স্বীকার করে, তাহলে অন্যান্য দেশ যারা রাফাল কেনার পরিকল্পনা করছে—তারা দ্বিধায় পড়তে বাধ্য হবে। অপরদিকে, যদি এই ঘটনা কোনো শত্রু রাষ্ট্রের নাশকতার ফল হয়, তাহলে বিষয়টি শুধু ভারতের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও আকাশ প্রতিরক্ষা নীতির জন্যও অশনিসংকেত হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন মহল থেকে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি উঠেছে। বিশ্লেষক ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জনগণের মধ্যে যাতে ভুল তথ্য না ছড়ায় এবং উদ্বেগ না বাড়ে, সেজন্য সরকারকে অবশ্যই দ্রুত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে হবে এবং পরিস্থিতির স্বচ্ছ ব্যাখ্যা দিতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, একটি সম্ভাব্য রাফাল দুর্ঘটনা শুধু একটি বিমান হারানোর ঘটনা নয়—এটি ভারতের সামরিক কৌশল, প্রযুক্তি, আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি এবং প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই বড় ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে।
বিজ্ঞাপন