শনিবার , ১০ মে, ২০২৫ | ২৭ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৫:১৩ ১০ মে ২০২৫
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যেই আজ শনিবার (১০ মে) দুই দেশ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। এই খবরে পাকিস্তানজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে স্বস্তি ও আনন্দের জোয়ার। রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে লাহোর, করাচি থেকে মুজাফফরাবাদ—সব শহরেই মানুষ রাস্তায় নেমে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে পড়েছে। চলছে মিষ্টি বিতরণ, শোনা যাচ্ছে 'পাকিস্তান দীর্ঘজীবী হোক' ধ্বনি।
আল জাজিরার লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে সাধারণ মানুষ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিকে জাতীয় গর্বের মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন। অনেকে এটিকে দেশের জন্য একটি কূটনৈতিক বিজয় বলেও মনে করছেন।
লাহোর শহরের বাসিন্দা যুবক মোহাম্মদ ফতেহ বলেন, “এটি পাকিস্তানের জন্য একটি বড় দিন। আমাদের সেনাবাহিনী শক্তির সঙ্গে জবাব দিয়েছে। যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়া ছাড়া ভারতের আর কোনো পথ খোলা ছিল না।”
ইসলামাবাদে ৪৫ বছর বয়সী গৃহবধূ জুবাইদা বিবি আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, “যুদ্ধ কেবল দুঃখ-কষ্ট বয়ে আনে। আমরা খুশি যে শান্তি ফিরে আসছে। আমার কাছে এটা ঈদের মতো লাগছে। আমরা জিতেছি।”
এদিকে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদেও দেখা গেছে স্বস্তির ছোঁয়া। যুদ্ধবিরতির খবরে অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। স্থানীয় বাসিন্দা জুলফিকার আলী বলেন, “আমাদের জন্য শান্তি মানেই বেঁচে থাকা। আমরা যথেষ্ট কষ্ট সহ্য করেছি। আমি খুশি যে পাকিস্তান ও ভারত উভয়ই একটি বুদ্ধিমান সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ একটি বিবৃতি দেন। তিনি লেখেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতব্যাপী আলোচনার পর, আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণাঙ্গ এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সাধারণ জ্ঞান ও দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য উভয় দেশকে অভিনন্দন।”
ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দুই দেশের পক্ষ থেকেই জানানো হয়, সারাদিন কূটনৈতিক তৎপরতার পর একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে, যার মাধ্যমে সামরিক কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই যুদ্ধবিরতি যদি স্থায়ী হয়, তাহলে এটি দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হবে।
বিজ্ঞাপন