ভারতের পারমাণবিক পদার্থ চুরি: আইএইএ-কে তদন্তের আহ্বান পাকিস্তানের

ভারতের পারমাণবিক পদার্থ চুরি: আইএইএ-কে তদন্তের আহ্বান পাকিস্তানের

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৯:৪৮ ১৬ মে ২০২৫

পাকিস্তান ভারতের ভেতরে পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ চুরির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-কে আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার (১৬ মে) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এর খবরে জানানো হয়, পাকিস্তান বৃহস্পতিবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে আইএইএ-কে ভারতের পারমাণবিক নিরাপত্তা বিষয়ক দুর্বলতা তদন্তের জন্য আহ্বান জানায়। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বারবার পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ চুরির ঘটনা ভারতের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারতে একের পর এক পারমাণবিক চুরির ঘটনা এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থের কালোবাজারি শুধু ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নয়, বরং পুরো অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য হুমকি তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আইএইএ’র এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”

এই প্রতিক্রিয়া ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যের জবাবে এসেছে। তিনি শ্রীনগরে সেনাদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেছিলেন, “পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারকে আইএইএ’র তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত।”

পাকিস্তান কড়াভাবে রাজনাথের এই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, এটি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে ভারতের অনিরাপত্তা ও হতাশার প্রতিফলন। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা আগ্রাসন প্রতিহত করতে যথেষ্ট সামরিক সক্ষমতা রাখে।

পাকিস্তান আরও জানিয়েছে, আইএইএ এবং আন্তর্জাতিক মহলের উচিত ভারতের পারমাণবিক নিরাপত্তা কাঠামো খতিয়ে দেখা। তারা উল্লেখ করে, ২০২৩ সালে উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে পাঁচজন ব্যক্তিকে একটি তেজস্ক্রিয় যন্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়, যা ভারতের ভাভা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার থেকে চুরি হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, ক্যালিফোর্নিয়াম নামক এক উচ্চতেজস্ক্রিয় পদার্থ উদ্ধার করা হয়েছিল, যার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য ১০ কোটি ডলারের বেশি।

২০২১ সালেও ক্যালিফোর্নিয়াম পাচারের অন্তত তিনটি ঘটনা ঘটে বলে দাবি পাকিস্তানের। এসব ঘটনা ভারতের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর দুর্বল নিরাপত্তা ও তেজস্ক্রিয় পদার্থের কালোবাজারের অস্তিত্বের ইঙ্গিত বহন করে বলে দাবি করেছে তারা।

উল্লেখ্য, ভারতের বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ২০০৮ সালের এক চুক্তির আওতায় আইএইএ’র নজরদারিতে থাকলেও, তাদের কৌশলগত পারমাণবিক কর্মসূচিগুলো এ তদারকি থেকে বাইরে রয়েছে।

বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ পারমাণবিক পরিস্থিতিতে এই পারস্পরিক অভিযোগ ও পাল্টা প্রতিক্রিয়াগুলো দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিজ্ঞাপন