বুধবার , ১৮ জুন, ২০২৫ | ৪ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৭:১৭ ১৮ জুন ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলকে সমর্থন করে সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ায়, তাহলে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা বিশ্লেষকরা।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান ইতোমধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুত রেখেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এসব প্রস্তুতি ইরানের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া বা প্রতিশোধমূলক আঘাতের ইঙ্গিত বহন করে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে তিন ডজনেরও বেশি জ্বালানিবাহী বিমান মোতায়েন করেছে। এসব বিমান মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলোকে আকাশপথে জ্বালানি সরবরাহ করবে। একইসঙ্গে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সম্ভাব্য বোমা হামলার সময় দীর্ঘপথ অতিক্রমকারী বোমারু বিমানগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
এদিকে ইসরায়েল হোয়াইট হাউসের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে যাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নেয়। ফলে মার্কিন প্রশাসনের ভেতরে আরও বিস্তৃত একটি যুদ্ধের আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের গোপন পারমাণবিক স্থাপনা—বিশেষ করে ‘ফোর্ডো’তে হামলা চালায়, তাহলে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজে হামলা চালাতে পারে। এটি সরাসরি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও সামরিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে।
তারা আরও জানিয়েছেন, ইরাক এবং সিরিয়ায় অবস্থানরত ইরানপন্থি মিলিশিয়ারা সেখানে অবস্থানরত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোর ওপর হামলার চেষ্টা করতে পারে। ফলে ওই অঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা পরিস্থিতিও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান এবং সৌদি আরবসহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০,০০০ এরও বেশি সেনা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সামান্য একটি উসকানি কিংবা ভুল সিদ্ধান্তই এই পরিস্থিতিকে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ দিতে পারে। আর সেটি হলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অস্থিরতা এবং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়বে, যার প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও।
বিজ্ঞাপন