Sorry, you have been blocked

You are unable to access thailand-u31.com

Why have I been blocked?

This website is using a security service to protect itself from online attacks. The action you just performed triggered the security solution. There are several actions that could trigger this block including submitting a certain word or phrase, a SQL command or malformed data.

What can I do to resolve this?

You can email the site owner to let them know you were blocked. Please include what you were doing when this page came up and the Cloudflare Ray ID found at the bottom of this page.

ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে না !

ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে না !

ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে না !

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৭:২৭ ৩০ জুলাই ২০২৫

বিশ্ব রাজনীতিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি একটি দীর্ঘদিনের বিতর্কিত ও আলোচিত ইস্যু। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ পশ্চিমা শক্তিগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে—ইরান নাকি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চায়। কিন্তু এই দাবির পক্ষে এখনো পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) বা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হাজির করতে পারেনি।

ইরান সব সময় দাবি করে এসেছে—তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত। প্রশ্ন হলো, যদি ইরান চায়, তাহলে এত বছরে বোমা বানায়নি কেন? এবং না চাইলেও, কেন এত উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে হলে ইরানের ধর্মীয় মূল্যবোধ, কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা, রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতকে একসঙ্গে বিশ্লেষণ করতে হবে।

১. ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ও নৈতিক অবস্থান

২০০৩ সালে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি একটি ফতোয়া জারি করেন, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়—পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি, মজুত কিংবা ব্যবহার ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ‘হারাম’। এটি শুধু একটি ধর্মীয় ফতোয়া নয়, বরং একটি নৈতিক ঘোষণা, যেখানে বলা হয়েছে—পারমাণবিক অস্ত্র নিরীহ মানুষের ওপর গণহত্যা চালায়, যা ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে।

ইরানের দৃষ্টিতে হিরোশিমা ও নাগাসাকির ধ্বংসযজ্ঞ এই নিষেধাজ্ঞার বাস্তব উদাহরণ। তারা মনে করে, পারমাণবিক অস্ত্র মানবতা, পরিবেশ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিরুদ্ধে চরম অপরাধ। ইসলামের যুদ্ধনীতিতে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা নিষিদ্ধ এবং সেই নীতিকে কঠোরভাবে অনুসরণ করে ইরান।

২. কৌশলগত বাস্তবতা: পারমাণবিক নয়, প্রতিরোধক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ

অনেকে মনে করেন, পারমাণবিক অস্ত্র থাকলে একটি দেশ নিরাপদ থাকে। কিন্তু ইতিহাস অন্য কথা বলে। যেমন:

  • পাকিস্তান, পারমাণবিক অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান অভিযানে তাদেরকে সহায়তা দিতে বাধ্য হয়েছিল।
  • উত্তর কোরিয়া, পারমাণবিক অস্ত্র থাকার পরও বিশ্ব মঞ্চে একঘরে।
  • রাশিয়া, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ, কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর চাপে রয়েছে।
  • ইসরায়েল, অঘোষিত পারমাণবিক শক্তিধর হওয়া সত্ত্বেও ইরানের সাম্প্রতিক হামলায় বড় ধরনের সামরিক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

এই বাস্তবতা ইরানকে বুঝিয়েছে—শুধু পারমাণবিক অস্ত্র নয়, কার্যকর প্রতিরোধব্যবস্থা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নিরাপত্তার চাবিকাঠি। তাই ইরান বেছে নিয়েছে উন্নত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং আধুনিক প্রতিরক্ষামূলক প্রযুক্তির পথে অগ্রসর হওয়ার নীতি।

৩. রাজনৈতিক ঝুঁকি ও আন্তর্জাতিক চাপ

পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করার মতো ইউরেনিয়াম মজুত থাকলেও ইরান কেন সে পথে যায় না? কারণ, এই পথে গেলে তাদের সামনে তিনটি বড় রাজনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে:

‌ক. নতুন নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক চাপে জনগণের ভোগান্তি

ইরান ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে। ২০০৫ সালের পর থেকে দেশটির বিরুদ্ধে দেড় হাজারেরও বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নতুন করে পারমাণবিক বোমা বানালে এই নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর হবে এবং জনজীবনে গভীর প্রভাব ফেলবে।

খ. মিত্রদের সমর্থন হারানো

চীন ও রাশিয়ার মতো শক্তিশালী মিত্ররা এনপিটির (NPT) সদস্য। তারা কোনোভাবেই চায় না, ইরান নতুন করে পারমাণবিক শক্তিধর হোক। ফলে এমন পদক্ষেপে ইরান আন্তর্জাতিক সমর্থন হারিয়ে ফেলবে।

গ. সরাসরি হামলার ঝুঁকি

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ চালিয়েছে (১৩ ও ২২ জুন)। ভবিষ্যতে যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের ঘোষণা দেয়, তাহলে দুই দেশ একসঙ্গে বড় আকারে সামরিক অভিযানে যেতে পারে।

উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ: একটি কৌশলগত কার্ড

ইরান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে, যদিও অস্ত্র-মানের ইউরেনিয়ামের জন্য ৯০ শতাংশ প্রয়োজন। বিশ্লেষকদের মতে, এটা একটি কৌশলগত চাপে রাখার পন্থা। এর মাধ্যমে তারা:

  • আলোচনায় প্রভাব বাড়াতে চায়, বিশেষ করে জেসিপিওএ (JCPOA) চুক্তি পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রে।
  • আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভারসাম্য আনে, যেমন ইসরায়েলের অস্ত্রভাণ্ডার ও সৌদি আরবের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিপরীতে।
  • পারমাণবিক সক্ষমতা প্রদর্শন করে, তবে তা অস্ত্রের নয়, প্রতিরোধের প্রতীক।

আন্তর্জাতিক চুক্তির ভঙ্গ ও দ্বিমুখী আচরণ

ইরান ১৯৬৮ সালের এনপিটির সদস্য এবং ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জেসিপিওএ-চুক্তির অধীনে তাদের কর্মসূচি সীমিত রেখেছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একতরফাভাবে সেই চুক্তি বাতিল করেন। এরপর থেকেই ইরান তার অবস্থানে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়।

সম্প্রতি আইএইএ ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান আইএইএর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসির সফর প্রত্যাখ্যান করে।

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের দ্বিচারিতা: ‘একজনের অস্ত্র নিরাপত্তা, অন্যজনের হুমকি’

বিশ্লেষক নোয়াম চমস্কি একে যথার্থভাবেই বলেছেন—“যে অস্ত্র ইসরায়েলের হাতে নিরাপত্তা, সেটি ইরানের হাতে হুমকি—এটাই বিশ্বরাজনীতির ভণ্ডামি।”

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের আগে ইরানকেই পারমাণবিক প্রযুক্তি সরবরাহ করেছিল। আজ সেই ইরানকেই হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল কখনোই এনপিটিতে স্বাক্ষর করেনি এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রায় ৮০–৪০০টি পারমাণবিক বোমা থাকার সম্ভাবনা থাকলেও তাদের কোনো জবাবদিহি নেই।

শক্তি নয়, নীতি নির্ধারণ করবে ভবিষ্যৎ

ইরান জানে, পারমাণবিক অস্ত্র কৌশলগতভাবে আত্মঘাতী এবং নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য। তাই তারা বেছে নিয়েছে নীতিনির্ভর কূটনৈতিক পথ। শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকার তাদের রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত তা সম্মান করা।

চাপ নয়, সংলাপই পারে উত্তেজনাকে প্রশমিত করতে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি যদি ন্যায় ও অংশগ্রহণভিত্তিক হয়, তাহলে শুধু ইরানের জন্যই নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি নিরাপদ ও ভারসাম্যপূর্ণ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/