শনিবার , ৩১ মে, ২০২৫ | ১৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৪:২৩ ২৯ মে ২০২৫
রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলা চালিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত ৯টার দিকে রংপুর নগরীর সেনপাড়া এলাকায় স্কাইভিউ বাসভবনে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসার সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।
ঘটনার পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেন। দু’পক্ষের মধ্যে একাধিকবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পুরো এলাকা উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে জিএম কাদের রংপুরে আসেন এবং সেনপাড়ার স্কাইভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন। এরপর হঠাৎ করেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরকে “আওয়ামী লীগের দোসর” বলে আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভের ঘোষণা দেন।
সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীরা রংপুর প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিএনপি কার্যালয়সংলগ্ন গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে অবস্থান নেয়। পরে সেখান থেকে তারা স্কাইভিউর দিকে গিয়ে পাথর নিক্ষেপ করতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেন।
জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। তখন ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে শহরের টাউনহল এলাকায় আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেন এবং জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা সেনপাড়া ও সেন্ট্রাল রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেন।
রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির বলেন, “আমরা সুস্থ ধারার রাজনীতি করতে চাই। কিন্তু যারা আজ এই আগুন লাগিয়েছে, সেই আগুন সহজে নেভানো যাবে না।” তিনি আরও জানান, এনসিপি ও অন্য একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও এই হামলায় জড়িত ছিলেন।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, “দেশে যদি আইনশৃঙ্খলা থাকতো, তাহলে এভাবে হামলা হতো না। এখন ইচ্ছেমতো ২০-৫০ জন মিলে সহিংসতা চালাচ্ছে। আমরা দলীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, পরবর্তী সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।”
অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, “সেনপাড়ায় বিক্ষোভ মিছিলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। আমরা রংপুরের জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—টাউনহলে এসে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করুন।”
বর্তমানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীর টহলও জোরদার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন