Sorry, you have been blocked

You are unable to access thailand-u31.com

Why have I been blocked?

This website is using a security service to protect itself from online attacks. The action you just performed triggered the security solution. There are several actions that could trigger this block including submitting a certain word or phrase, a SQL command or malformed data.

What can I do to resolve this?

You can email the site owner to let them know you were blocked. Please include what you were doing when this page came up and the Cloudflare Ray ID found at the bottom of this page.

“ছেলেকে হারানোর শোকে দুই বছর ধরে ভাত খান না”_ মা

“ছেলেকে হারানোর শোকে দুই বছর ধরে ভাত খান না”_ মা

“ছেলেকে হারানোর শোকে দুই বছর ধরে ভাত খান না”_ মা

ছেলেকে হারানোর শোকে দুই বছর ধরে ভাত খান না বুয়েট শিক্ষার্থী তারিকুজ্জামান সানির মা মিসেস হারুন অর রশিদ।

মোরনিউজ ডেস্ক
মোরনিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১৬ ২৬ জুলাই ২০২৪

২০২২ সালের ১৪ জুলাই দুপুর বেলা। সানি মাকে বলে বাইরে যাবে। মা ভরদুপুরে ছেলেকে না  খেয়ে বের হতে দিবেন না। তার জন্য প্লেটে করে নিয়ে আসেন ভাত। সানি তাড়াহুড়ো করে অল্প ভাত খেয়ে বের হয়ে যায়। বলে যায়, পরে বাসায় ফিরে খাবে। পরে বাসায় ফিরেছে ঠিকই, তবে সানির নিথর দেহ। ছেলে ভাত শেষ করে যায়নি। এই কারণে সানির মৃত্যুর পর আর ভাত খান না মা।

২০২২ সালের ১৪ জুলাই বিকেলে ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন মৈনট ঘাটে ১৫ বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী তারিকুজ্জামান সানি। ১৫ জুলাই বেলা ১১টা ২৬ মিনিটে মৈনট ঘাট থেকে সানির লাশ উদ্ধার করা হয়।

 

ঘটনার পরদিন সানির ভাই হাসানুজ্জামান দোহার থানায় সানির ১৫ বন্ধুকে আসামি করে মামলা করেন। পরে আসামিদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা জামিনে আছেন। এদিকে ঘটনার দুই বছর পার হলেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। দুই তদন্ত কর্মকর্তার হাত ঘুরে এখন মামলার তদন্ত করছেন দোহারের কুতুবপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর কাওসার গাজী। এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে ২০ বারের মতো সময় নিয়েছে তদন্ত সংস্থা। আগামি ৪ আগস্ট মামলার প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।

 

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাওসার গাজী বলেন, কয়েকদিন হলো মামলার তদন্তভার পেয়েছি। তদন্ত চলছে। ভিকটিমের পরিবার হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। কিন্তু সেখানে কোনো ডিজিটাল সিস্টেম না থাকায় কোনো ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রত্যক্ষদর্শী কোনো সাক্ষীও নেই। গ্রেপ্তার ১৫ আসামির কেউ হত্যার কথা স্বীকার করেনি। তারা বলছেন, সানি পা পিছলে পড়ে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে। তার মৃত্যুর পেছনে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এছাড়া যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- সানি পানিতে ডুবে শ্বাসকষ্টে মারা গেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন কোনো তথ্য ময়নাতদন্তে আসেনি। সিসি ক্যামেরা থাকলে বিষয়টা তদন্ত করতে আরও সহজ হতো। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা ধারণা করছি, পল্টুনে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলতে গিয়ে পানিতে পড়ে ডুবে সে মারা গেছে। তার ব্যাগ, জুতা পানিতেই ভেসেছিলো।

 

তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী মামলার ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সার্বিক পর্যালোচনা শেষে তদন্তে যা পাওয়া যাবে সেটা উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

 

সানির ভাই হাসানুজ্জামান বলেন, আভাস পাচ্ছি পুলিশ একটা রিপোর্ট দিবে। মামলা করেছি। পুলিশ তদন্ত করছে। তারা তাদের মত করে তদন্ত করছেন। আমি অপেক্ষায় আছি। তদন্ত রিপোর্ট পজিটিভ না আসে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবো।

 

তিনি বলেন, তারা ১৬ জন একসাথে ঘুরতে গেলো। ১৫ জন জ্যান্ত (জীবিত) আসতে পারলো। একজন আসতে পারলো না। আর সবাইকে ভালোভাবে সে চিনতোও না। আগে কখনো ওদের সাথে ঘুরতে যায়নি। আর সানির লাশ নদীর খুব দূরে পাওয়া যায়নি, কাছেই পাওয়া গেছে। আর তার আইফোন, বাইকের চাবিও পাওয়া যায়নি। এরপর ১৫ জন ১৫ রকমের কথা বলেছে। এটা সন্দেহজনক। আর তারা তো নদীর মাঝে ঘুরতে যায়নি। পাড়েই ছিলো। সন্ধ্যার পর সেখানে মানুষ থাকে না। আর ঘটনাটা ঘটেছে সন্ধ্যা ৭ টার পর। পাশে একটা বালুর ড্রেজার ছিলো। ওদের (আসামিদের) কথা বালুর ড্রেজার থেকে পড়ে যায়। আমার কথা পড়ে যেতে পারে। সেখানে তো ১৫ জনের ৩০ টা হাত ছিলো। পাশেই বাঁশ ছিলো, দড়ি ছিলো। তারা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করতো। আর মানুষ বাঁচানোর চেষ্টা করলে আল্লাহও তাকে সাহায্য করেন।

 

হাসানুজ্জামান বলেন, ভাইকে নিয়ে অনেক আশা ছিলো। আর সে বুয়েটের ছাত্র। তাকে নিয়ে আশাটাও একটু বেশি ছিলো। আমাদের বাবা নেই। মা আর আমরা দুই ভাই। সেই ভাইটাও মারা গেলো। এরপর থেকে মা নিস্তব্ধ হয়ে গেছেন। সানির কথা মনে পড়লে কাঁদেন। সেদিন দুপুরে সানি হুট করে বের হতে চায়। মা তাকে না খেয়ে যেতে দিবেন না। ওর জন্য এক প্লেট ভাত নিয়ে আসে। কিন্তু সানি অল্প কিছু ভাত খেয়ে বের হয়ে যায়। ছেলে ভাত শেষ করে যায়নি এ কারণে সানির মৃত্যুর পর মা আর ভাত খান না। রুটি, স্যুপ খান। আমরাও জোর করি না। এতে তার মানসিক সমস্যা হতে পারে। আর ডাক্তারও বলেছেন, ভাত না খেয়েও মানুষ বাঁচে।

 

তিনি বলেন, আমার ভাই মারা গেছে। সন্দেহ থাকা স্বাভাবিক। ভাই ছাড়া আমার আর কেউ নাই। মামলা করেছি। প্রকৃত দোষীদের সাজা চাই।

 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৪ জুলাই বিকেলে ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন মৈনট ঘাটে ১৫ বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী তারিকুজ্জামান সানি। বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের পঞ্চম সেশনের ছাত্র সানির বাবার নাম হারুন অর রশিদ। বাড়ি রাজধানীর হাজারীবাগে।

নিখোঁজ হওয়ার পর সানির সন্ধানে নামে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে ডুবুরি দল। ওইদিন রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে ১৫ জুলাই বেলা ১১টা ২৬ মিনিটে মৈনট ঘাট থেকে ওই বুয়েট শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ১৫ জুলাই বিকেলে সানির বড় ভাই হাসানুজ্জামান একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন- শরীফুল হোসেন, শাকিল আহম্মেদ, সেজান আহম্মেদ, রুবেল, সজীব, নুরজামান, নাসির, মারুফ, আশরাফুল আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, নোমান, জাহিদ, এটিএম শাহরিয়ার মোমিন, মারুফুল হক মারুফ ও রোকনুজ্জামান ওরফে জিতু।

আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রনব কুমার দে বলেন, আসলে এটা হত্যাকাণ্ড নয়, পা পিছলে নিচে পড়ে মারা গেছে ছেলেটি। স্বাভাবিকভাবেই এ মামলার আসামিরা সম্পূর্ণ নির্দোষ। পুলিশ প্রতিবেদন কি আসে দেখা যাক, তারপর আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। তবে প্রত্যাশা করি, তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে মিথ্যা প্রমাণিত হবে।

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/