Sorry, you have been blocked

You are unable to access thailand-u31.com

Why have I been blocked?

This website is using a security service to protect itself from online attacks. The action you just performed triggered the security solution. There are several actions that could trigger this block including submitting a certain word or phrase, a SQL command or malformed data.

What can I do to resolve this?

You can email the site owner to let them know you were blocked. Please include what you were doing when this page came up and the Cloudflare Ray ID found at the bottom of this page.

ছেলের লাশেও গুলি লাগে, বললেন বাবা

ছেলের লাশেও গুলি লাগে, বললেন বাবা

ছেলের লাশেও গুলি লাগে, বললেন বাবা

মোরনিউজ ডেস্ক
মোরনিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫:০০ ২৭ জুলাই ২০২৪

১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেল! নরসিংদী শহরের জেলখানার মোড়! কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে। চলছে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলি। রাবার বুলেটের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় নবম শ্রেণিপড়ুয়া তাহমিদ ভূঁইয়া তামিম (১৫)। তার লাশ স্ট্রেচারে রেখে স্লোগান দিচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় আবার গুলি চালায় পুলিশ। সেই গুলি তাহমিদের লাশেও লাগে।

প্রায় ১০০ গজ দূরে দাঁড়িয়ে তাহমিদের বাবা রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া অসহায়ের মতো সে দৃশ্য দেখেছেন। আন্দোলনকারীদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে সেদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া একাধিক শিক্ষার্থীও প্রথম আলোর এই প্রতিনিধির কাছে লাশের গায়ে আবার গুলি লাগার একই বর্ণনা দিয়েছেন।

নিহত তাহমিদ নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমসের শিক্ষার্থী ছিল। পল্লিচিকিৎসক বাবা ও গৃহিণী মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় ছিল তাহমিদ। ১৩ ও ৩ বছর বয়সী দুটি বোন রয়েছে তাহমিদের।

তাহমিদদের বাড়ি ঘটনাস্থল (জেলাখানার মোড়) থেকে ৩০০ গজ দূরে, সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের নন্দীপাড়া গ্রামে। গত মঙ্গলবার তাহমিদদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, উঠানে একটি স্ট্রেচার পড়ে আছে। স্ট্রেচারটি ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের, জানালেন স্বজনেরা। তাঁরা বলেন, গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেলে ওই স্ট্রেচারে করেই তাহমিদের লাশ বাড়িতে আনা হয়েছিল। পরিস্থিতির কারণে সেটি এখনো ফেরত দেওয়া হয়নি। ওই দিনের পর থেকেই তাহমিদের বাবা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন।

বারান্দায় দাঁড়ানো আহাদের ডান চোখে লাগে গুলি
তাহমিদের স্বজনেরা জানান, ঘটনার দিন পরিবারের সবাই একসঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। বিশ্রামের জন্য বিছানায় শুয়ে তাহমিদ ও তার ছোট বোন লিনাত (১৩) মুঠোফোন নিয়ে খেলছিল। একপর্যায়ে তাহমিদ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এ সময় মা রান্নাঘরে কাজ করছিলেন। পাশের ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন বাবা।

নিহত তাহমিদ নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমসের শিক্ষার্থী ছিল। পল্লিচিকিৎসক বাবা ও গৃহিণী মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় ছিল তাহমিদ। ১৩ ও ৩ বছর বয়সী দুটি বোন রয়েছে তাহমিদের।

তাহমিদ ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে উঠতেই পাড়ার এক নারী তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘কোথায় যাচ্ছ?’

উত্তরে তাহমিদ বলেছিল, ‘জেলখানার মোড়ে কী হচ্ছে, একটু দেখে আসি।’ ওই নারী তাকে ঝামেলার মধ্যে যেতে নিষেধ করেছিলেন; কিন্তু তাহমিদ তাঁর কথা শোনেনি। তাহমিদকে কোথাও না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।

এদিকে তাহমিদ জেলখানার মোড়ে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে যায়। সে সময় পুলিশ গুলি চালাচ্ছিল। ঘটনাস্থলের ঠিক কোন স্থানে তাহমিদ পুলিশের রাবার বুলেটে বিদ্ধ হয়, তা জানা যায়নি। আন্দোলনরত ব্যক্তিরা গুলিবিদ্ধ তাহমিদকে নিয়ে পাশের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যান। চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পরই তাঁরা লাশ হাসপাতালের স্ট্রেচারে করে আন্দোলনস্থলে নিয়ে আসেন।

তিনি দেখেন, ছেলের লাশে আবারও গুলি লাগল। রফিকুল চিৎকার করতে থাকলে আন্দোলনকারীরা তাঁকে মসজিদের ভেতরে টেনে নিয়ে যান।
১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাবার বুলেটে বিদ্ধ তাহমিদকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এনেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাকে মৃত ঘোষণা করার পরপরই উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালান। আমরা চেয়েছিলাম, তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাতে। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে আমরা সেটা পারিনি।’

হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে স্টেডিয়ামের ফটকে শহীদ মিনারের সামনে (জেলখানার মোড়ের কাছে) তাহমিদের লাশ স্ট্রেচারে করে নিয়ে আসেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তার লাশ সামনে রেখে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। আবার তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তখন সেখানে উপস্থিত হন তাহমিদের বাবা রফিকুল ইসলাম। তিনি দেখেন, ছেলের লাশে আবারও গুলি লাগল। রফিকুল চিৎকার করতে থাকলে আন্দোলনকারীরা তাঁকে মসজিদের ভেতরে টেনে নিয়ে যান।

গোলাগুলি কিছুটা কমলে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তাহমিদের লাশ নিয়ে বাড়িতে ফেরেন রফিকুল। ছেলের বিদ্যালয় ও স্থানীয় ঈদগাহে দুই দফা জানাজা শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই চিনিশপুর কবরস্থানে লাশ বৃহস্পতিবার রাতেই দাফন করা হয়।

লাশের ময়নাতদন্ত করার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে আমাকে বলা হয়েছিল; কিন্তু রাজি হইনি। পুলিশ সবার সামনেই গুলি করে ছেলেকে মেরেছে, ময়নাতদন্ত করে আর কী হবে? ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না।
রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া
তাহমিদের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না প্রতিবেশী ও এলাকার লোকজন। নন্দীপাড়া গ্রামের অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁদের ভাষ্য, ১৫ বছর বয়সী তাহমিদ সচেতনভাবে আন্দোলনে যায়নি। বাড়িতে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তার দুই ফুফাতো ভাইও সেদিন আন্দোলনে যাননি। সে কীভাবে সেখানে গেল, এটাই আশ্চর্যের! শুধু কৌতূহল থেকে সেখানে গিয়েই এমন পরিণতি হলো তাঁর। হয়তো পরিচিতজনদের পেয়ে তাদের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল।

রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘লাশের ময়নাতদন্ত করার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে আমাকে বলা হয়েছিল; কিন্তু রাজি হইনি। পুলিশ সবার সামনেই গুলি করে ছেলেকে মেরেছে, ময়নাতদন্ত করে আর কী হবে? ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না।’

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/