Sorry, you have been blocked

You are unable to access thailand-u31.com

Why have I been blocked?

This website is using a security service to protect itself from online attacks. The action you just performed triggered the security solution. There are several actions that could trigger this block including submitting a certain word or phrase, a SQL command or malformed data.

What can I do to resolve this?

You can email the site owner to let them know you were blocked. Please include what you were doing when this page came up and the Cloudflare Ray ID found at the bottom of this page.

পাল্টাপাল্টি দোষারোপ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ্যে

পাল্টাপাল্টি দোষারোপ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ্যে

পাল্টাপাল্টি দোষারোপ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ্যে

মোরনিউজ ডেস্ক
মোরনিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫:০৯ ২৭ জুলাই ২০২৪

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ্যে,পাল্টাপাল্টি দোষারোপ 
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ্যে এসেছে। এ আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতা প্রতিরোধে দলটি রাজপথে অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। সেটিকে রাজনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন দলের নেতাদের অনেকে। এই ব্যর্থতার প্রশ্নে এখন কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সর্বত্র নেতারা একে অপরকে দোষারোপের মাধ্যমে ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন। অনেক ক্ষেত্রে নেতাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, তর্কাতর্কি বা বাদানুবাদ পর্যন্ত গড়াচ্ছে।

যদিও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নেতাদের দোষারোপ বা বাদানুবাদের ঘটনাকে ছোট করে দেখার চেষ্টা করছেন। তবে কেউ কেউ বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে দলের ভূমিকা এতটাই ভঙ্গুর ছিল যে অনেকেই তা মেনে নিতে পারছেন না, হকচকিত হয়ে পড়েছেন। এ জন্য একে অপরকে দোষারোপ করে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করছেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে দলের দুর্বলতা প্রকাশ পাওয়া এবং জনমত বিপক্ষে চলে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে সরকারের প্রতি তরুণ প্রজন্মের বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা ভাবাচ্ছে তাঁদের। দলের বিভিন্ন স্তরে আলোচনায় দল পুনর্গঠনের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, এখন ঘুরে দাঁড়াতে হলে দল পুনর্গঠনে হাত দিতে হবে। নতুবা পুরোনো মুখ ও পুরোনো নীতি নিয়ে মানুষের মন জয় করা যাবে না। ভবিষ্যতে এ ধরনের ধাক্কা এলে সামলানো কঠিন হবে।

কেউ কেউ বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে দলের ভূমিকা এতটাই ভঙ্গুর ছিল যে অনেকেই তা মেনে নিতে পারছেন না, হকচকিত হয়ে পড়েছেন। এ জন্য একে অপরকে দোষারোপ করে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করছেন।
গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে জানান, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে গত চার দিন মূল্যায়ন সভা করেছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘গত চার দিনে আমরা যে বৈঠকগুলো করেছি, কোথাও কি হাতাহাতি, মারামারি হয়েছে? তর্ক–বিতর্ক গণতন্ত্রের প্রাণ। আওয়ামী লীগ অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা করে। এখানে বিতর্ক হতেই পারে। যেকোনো বিষয়ে তর্ক হতেই পারে; কিন্তু কেউ তো মারামারি করেনি। কোনো হাতাহাতি হয়নি।’

দোষারোপ, উত্তেজনা, তর্কাতর্কি
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে একটি সমন্বয় সভা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা। কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজধানীর যেসব স্থানে ব্যাপক সংঘাত হয়েছে, সেসব এলাকার জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের নিয়ে ধারাবাহিকভাবে সভা করছে ক্ষমতাসীন দলটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের সভার পর কয়েকজন নেতাকে নিয়ে তেজগাঁও কার্যালয়ে নিজ কক্ষে বসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সে সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংঘাত, সহিংসতা প্রতিরোধে দলের ব্যর্থতা নিয়ে তর্কে জড়ান যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান (কচি)। তাঁদের তর্কাতর্কি একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কিতে গড়ায়। তখন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা ওই দুই নেতাকে নিবৃত্ত করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত অন্য নেতারাও একে অপরের প্রতি বিষোদ্‌গারে লিপ্ত হন।

গত চার দিনে আমরা যে বৈঠকগুলো করেছি, কোথাও কি হাতাহাতি, মারামারি হয়েছে? তর্ক–বিতর্ক গণতন্ত্রের প্রাণ। আওয়ামী লীগ অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা করে। এখানে বিতর্ক হতেই পারে। যেকোনো বিষয়ে তর্ক হতেই পারে; কিন্তু কেউ তো মারামারি করেনি। কোনো হাতাহাতি হয়নি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের,
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন দায়িত্বশীল নেতা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, দলের মধ্যে এভাবে বাদানুবাদ বা তর্কাতর্কির ঘটনা নজিরবিহীন। কিন্তু উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে নেতাদের মধ্যে সহিষ্ণুতার ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরুতে আওয়ামী লীগ নেতা, জনপ্রতিনিধি ও সমর্থকদের অনেকের পরিবারের সদস্যরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এ নিয়েও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বসহ বিভিন্ন স্তরে প্রতিক্রিয়া হয়।

‘বিভেদের কারণেই দুর্বলতা’
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভূমিকা না রাখার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ১০৮টি ইউনিট কমিটির মধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দলের নেতারা বলছেন, মহানগরে নেতৃত্বের বিভেদের কারণেই সাংগঠনিক অবস্থা এখন ভঙ্গুর।

গত মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং দলীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথ সভায়ও দলের দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই বৈঠকেও নেতা-কর্মীদের অনেকে দলীয় দুর্বলতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। অনেকে বলেছেন, দলের পদ বাগিয়ে নিতে, সরকারি দপ্তরের ঠিকাদারি কাজ পেতে যত তৎপরতা দেখা যায়, দুঃসময়ে দলের জন্য সেই তৎপরতা থাকে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় এই ‘সুবিধাভোগীরা’ ঘর থেকে বের হননি।

এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনে ব্যর্থতার দায়ভার বেশি এসেছে সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের ওপর। সংগঠনটির সাবেক এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগ এতটা অজনপ্রিয়, তা ভাবনায় আসেনি। এসব নেতা কীভাবে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মুখ দেখাবেন? ওই নেতা আরও বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগকে দেশের মানুষ কেন অপছন্দ করছে, তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও বিপদ আসতে পারে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ১০৮টি ইউনিট কমিটির মধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দলের নেতারা বলছেন, মহানগরে নেতৃত্বের বিভেদের কারণেই সাংগঠনিক অবস্থা এখন ভঙ্গুর।
১৫ বছরে প্রথম বড় ধাক্কা, শুরুর দিকে আন্দোলন মোকাবিলায় মাঠে ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু সংঘর্ষের তীব্রতা বাড়ার পর নেতা-কর্মীদের মাঠে তেমন দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলছেন, কেন্দ্র থেকে মহানগর, সহযোগী সংগঠন এবং তৃণমূল পর্যায়ে একধরনের সমন্বয়হীনতা, এমনকি হকচকিত হয়ে পড়ার লক্ষণ দেখা গেছে। এটা হয়েছে সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে এর পরিপূর্ণ বিশ্লেষণ এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা ভবিষ্যতে বিপদে পড়তে হতে পারে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ
কোটা সংস্কার আন্দোলন সংঘাতে রূপ নিলে সারা দেশে দলীয় নেতা-কর্মীদের শক্ত অবস্থান দেখানোর বিষয়ে কেন্দ্র থেকে বারবার নির্দেশনা দিলেও তা হয়নি। শেষ দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা ফোন দিয়ে মরিয়া হয়ে মাঠে নামার তাগিদ দিয়েছেন। উত্তরা এলাকা কয়েক দিন আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ১৯ জুলাই কেন্দ্র থেকে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে নামার আহ্বান জানানো হয়। তিনি দলবল নিয়ে নামলেও শেষ পর্যন্ত নিজেই গুরুতর আহত হন এবং তাঁর এক সহযোগী মারা যান। এরপর উত্তরা এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য হাবিব হাসানকে নামার আহ্বান জানান কেন্দ্রীয় নেতারা। তিনিও তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি।


এসব দুর্বলতা নিয়ে দলের নেতা ছাড়াও সাধারণ কর্মীরাও নানান বিশ্লেষণ করছেন। টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। এ সময়ে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে হেফাজতের তাণ্ডব মোকাবিলা করেছে সরকার। বিরোধী দলের টানা হরতাল-অবরোধ এবং সহিংসতার পরও ২০১৪ সালে দশম জাতীয় নির্বাচন করে সরকার মেয়াদ শেষ করে। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি বড় বড় জমায়েত করেও কাবু করতে পারেনি আওয়ামী লীগকে। পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থেকে বিএনপিকে মাঠছাড়া করার বিষয়টি সগৌরবে প্রচার করেছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। কিন্তু এবার কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে মনে করেন দলটির নীতিনির্ধারকেরা।

 

উত্তরা এলাকা কয়েক দিন আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ১৯ জুলাই কেন্দ্র থেকে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে নামার আহ্বান জানানো হয়। তিনি দলবল নিয়ে নামলেও শেষ পর্যন্ত নিজেই গুরুতর আহত হন এবং তাঁর এক সহযোগী মারা যান।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ মনে করেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের ব্যাপকতা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে আওয়ামী লীগ। এ জন্য এতে বিএনপি-জামায়াত প্রবেশ করে সংঘাতের দিকে নিয়ে গেছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই সংঘাত ঠেকানোর ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সীমাবদ্ধতা, দুর্বলতা ও অসামর্থ্য দেখা গেছে। কারণ, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে দলে টাকার বিনিময়ে অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। অনেকে রাজনৈতিক আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে বিত্তবৈভবের দিকে ছুটেছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে এর পরিপূর্ণ বিশ্লেষণ এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা ভবিষ্যতে বিপদে পড়তে হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/