Sorry, you have been blocked

You are unable to access thailand-u31.com

Why have I been blocked?

This website is using a security service to protect itself from online attacks. The action you just performed triggered the security solution. There are several actions that could trigger this block including submitting a certain word or phrase, a SQL command or malformed data.

What can I do to resolve this?

You can email the site owner to let them know you were blocked. Please include what you were doing when this page came up and the Cloudflare Ray ID found at the bottom of this page.

ভাগ্য বদলাতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শেরপুরের গনি মিয়া

ভাগ্য বদলাতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শেরপুরের গনি মিয়া

ভাগ্য বদলাতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শেরপুরের গনি মিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, মোরনিউজবিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ১১:০৭ ২৫ আগস্ট ২০২৪

ঋণের টাকা জোগাড় করতে ঢাকায় গিয়েছিলেন গনি মিয়া। ঢাকার মহাখালীতে ভাড়ায় রিকশা চালাতেন। প্রতিদিন রিকশা চালানো শেষে গ্যারেজে জমা দিয়ে বাসায় ফিরতেন তিনি। গত ১৯ জুলাই রিকশা জমা দিয়ে চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন, পাশেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলছিল। এ সময় একটি গুলি এসে লাগে চায়ের দোকানে বসে থাকা গনি মিয়ার বুকে। স্থানীয় লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়া গেলে তিনি মারা যান। গত ২২ জুলাই তার পরিবার মরদেহ খুঁজে পায়।

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খরিয়াকাজীর চর ইউনিয়নের উওর খরিয়া গ্রামের মো. শাহেব আলীর ছেলে গনি মিয়া (৪০)। একজন দিনমজুর হিসেবে গ্রামে কাজ করতেন। নিজের বলতে শুধু একখান ঘর রয়েছে তার। পাঁচ সদস্যের পরিবার, গ্রামে নেই কোনো আবাদি জমি। ঘরের ভিটাটুকু তার শেষ সম্বল। ঋণের টাকা জোগাড় করতে ঢাকাই রিকশা চালাতে যান গনি মিয়া। কিন্তু ভাগ্য বদলাতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন গ্রামে। তার পরিবারে এক মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তবে কিছুটা সাপোর্ট দিতেন তার মেজো ছেলে সুমন মিয়া, সে গ্রামের একটা ওয়েল্ডিং মেশিনের দোকানে কাজ করে, বয়স ১৩ থেকে ১৪ হবে।  

অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মারা যাওয়ায় দিশাহারা তার পরিবার। পরিবারে এখন হাল ধরেছে তার মেজো ছেলে সুমন মিয়া। যা আয়-রোজগার করে, সেটা দিয়ে কোনোরকম পরিবার চলছে। তবে ঋণের টেনশনে দিশাহারা এই পরিবার।

গনি মিয়ার স্ত্রী সবুজা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী ঢাকায় রিকশা চালাইতে গেছিল সংসারের ঋণের বুঝা কমাইতে। এখন আমার স্বামী আইছে লাশ হয়ে। সে মহাখালীতে রিকশা চালাতো, সেখানে নাখালপাড়ায় চায়ের দোকানে বসে চা খাইতাছিলো, এমন সময় পাশে সংঘর্ষ লাগে। এ সময় দুইটা গুলি আমার স্বামীর বুকে লাগে। ওইখানের লোকজন হাসপাতালে নিয়া গেলে তিনি মারা যান। গত ২২ জুলাই আমরা তার লাশ হাতে পাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামীরে ওরা গুলি করে মারছে। তিন সন্তান নিয়ে আমার চলা কঠিন হয়ে গেছে। ঋণের বোঝা টানতে টানতে এমনি অবস্থা খারাপ। এখন স্বামী নাই, পোলাডা কিছু কামাই করে নিয়ে আয় ওটা দিয়ে চলতাছি। সামনে যে কি হইব বুঝতে পারতাছি না। আমার বড় পুলাটা এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হইছে। ওরে আপনারা চাকরির ব্যবস্থা করে দেন তাতে কইরা আমরা বাঁচতে পারি। ঘরের ভিটাটুক ছাড়া কিছুই নাই, পাওনাদাররা মাঝে মাঝে আসে বাড়িতে। এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সহযোগিতাও পাই নাই আমরা।’

ওই এলাকার  শাহনাজন আলী বলেন, ‘ওরা খুবই দরিদ্র মানুষ। আগে শ্বশুর বাড়ি থাকতো। ঋণ কইরা এ বাড়িভিটা কিনছে, আড়াই শতাংশ জায়গা তাদের একমাত্র সম্বল। গনি মিয়া বাইরে কাজ করতো তারা চেষ্টা করে ভালোই চলতেছিল, হঠাৎ কইরা ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশের গুলি সে মারা যায়। গ্রামের অশিক্ষিত মানুষ ঢাকায় রিকশা চালাই তো গেছিল ভাগ্য বদলানোর জন্য, নিজের পরিবারে ঋণ কমানোর জন্য, আইলো লাশ হয়ে। এখন পরিবারটার চলা খুব কঠিন। সরকারি কোনো সহযোগিতা কিছু পায় নাই। সবাইকে বলি ওদেরকে সহযোগিতা করার জন্য।’

গনি মিয়ার বাবা শায়েব আলী বলেন, ‘আমার পুলাটা ঢাকায় গিয়েছিল রিকশা চালাইতে। এমনি কইরা লাশ হয়ে যে ফিরবো বুঝি নাই। ওর দুইটা পোলা-মাইয়া ও বউরে কেরা দেখবো এহন। আমিও বুড়া মানুষ, আমার আগে আমার পোলাটা মইরা গেলো। ঘরটা ছাড়া আর কিছুই নাই, কি খাইবো কেমনে বাঁচবো। দিন এনে দিন খাওয়া পরিবারের উপার্জনের মানুষটাও নাই, অগরচালা খুব কঠিন হয়ে গেছে এখন।’

গনি মিয়ার বিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাবের আহমেদ বলেন, যারা মারা গেছে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে আমরা ডিসি অফিসে পাঠাচ্ছি, ওইখান থেকে সরকারি যে অনুদান আসতেছে আমরা ওই পরিবারগুলোকে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করতেছি। গনি মিয়ার বিষয়ে আমি আবেদন পাইনি। তবে মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তাদের আবেদন পেলে আমি সেটা ডিসি অফিসে ফরওয়ার্ড করে দেব, সরকারিভাবে তাদের সহযোগিতা খুব শিগগিরই পৌঁছে দেওয়া হবে। 

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/