বুধবার , ২৩ জুলাই, ২০২৫ | ৮ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৫:০৩ ২৩ জুলাই ২০২৫
ইরান মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই নয়, বরং একটি কৌশলগত বার্তাও দিল বিশ্বকে। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) ‘কাসেদ’ নামের উৎক্ষেপণযান ব্যবহার করে একটি স্যাটেলাইট সফলভাবে সাবঅরবিটাল কক্ষপথে পাঠিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই উৎক্ষেপণ ইরানের সামরিক সক্ষমতা এবং কৌশলগত উদ্দেশ্যেরই প্রতিফলন।
ওয়াশিংটনের এলিয়ট স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের সহকারী অধ্যাপক ও মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক সিনা আজোদি বলেন, ইরান এখন কেবল সক্ষমতা বাড়াচ্ছে না, বরং স্পষ্টভাবে শক্তির বার্তা দিচ্ছে। তার মতে, এমন উৎক্ষেপণের মাধ্যমে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন সম্ভব—যা কোনো সংঘাত ছাড়াই সামরিক শক্তি বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করে।
ইরান দাবি করছে, এটি তাদের মহাকাশ গবেষণার অংশ। তবে পশ্চিমা বিশ্লেষকরা একে সামরিক কৌশলের অঙ্গ বলেই মনে করছেন। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ফক্স বলেন, এই উৎক্ষেপণ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইরানের দীর্ঘমেয়াদি সামরিক পরিকল্পনা এখনও বহাল রয়েছে এবং তারা বিকল্প পথে শক্তি ধরে রাখার চেষ্টা করছে।
ওয়াশিংটনের গবেষক ফাতিমা আল-আসরা মনে করেন, একই প্রযুক্তিতে স্যাটেলাইট ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ সম্ভব। তার ভাষায়, প্রতিটি মহাকাশ উৎক্ষেপণ ইরানের দূরপাল্লার আঘাত হানার সক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
মার্কিন গবেষণা সংস্থা ইউনাইটেড এগেইনস্ট নিউক্লিয়ার ইরান-এর গবেষক কাসরা আরাবি বলেন, ‘কাসেদ’ উৎক্ষেপণ ইউরোপের জন্য এক ধরনের সতর্কবার্তা। তার মতে, এই ঘটনার পর জাতিসংঘের স্ন্যাপব্যাক নিষেধাজ্ঞা পুনরায় কার্যকর করার সময় এসে গেছে।
যুদ্ধের সময় ইরানের কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস হলেও, এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ দেখিয়ে দিল—তারা এখনও কৌশলগতভাবে অটল। শুধু নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই নয়, বরং আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারেও তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এই মহাকাশ অভিযান তাই শুধুই একটি প্রযুক্তিগত সাফল্য নয়, বরং যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে নিজেদের কৌশলগত অবস্থান এবং সামরিক দৃঢ়তার একটি বলিষ্ঠ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন