যৌনকর্মী থেকে চারবারের এমপি: ফিনিশ এমপির চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি

যৌনকর্মী থেকে চারবারের এমপি: ফিনিশ এমপির চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ১০:০৭ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফিনল্যান্ডের সংসদ সদস্য (এমপি) আননা কন্টুলা রাজনীতিতে আসার আগে নিজের অতীত জীবনের চাঞ্চল্যকর অভিজ্ঞতা খোলাখুলি প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি হেলসিঙ্গিন সানোমাত-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, মাত্র ১৬ বছর বয়সে ছাত্রাবাসে থাকার সময় আর্থিক সংকট ও কৌতূহল থেকে তিনি যৌনকর্মে যুক্ত হন এবং ‘এসকর্ট’ হিসেবে কাজ শুরু করেন।

বর্তমানে ৪৮ বছর বয়সী কন্টুলা সংসদে চতুর্থ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। যৌনকর্মীদের অধিকার নিয়ে তিনি বহু বছর ধরেই সোচ্চার থাকলেও এবারই প্রথম নিজের অতীত অভিজ্ঞতা জনসমক্ষে তুলে ধরলেন। তাঁর দাবি, প্রায় দুই দশক ধরে তিনি অনিয়মিতভাবে এ খাতে কাজ করেছেন।

২০০২ সালে তিনি যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘সালি’ সহ-প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রবন্ধের মাধ্যমে সমাজের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানান। ২০০৬ সালে ফিনল্যান্ডে যৌন কেনাবেচা আংশিকভাবে সীমিত করার আইন পাস হলে তিনি একে আংশিক বিজয় হিসেবে দেখেছিলেন, কারণ ওই আইনে মানব পাচারের শিকারদের সুরক্ষার ব্যবস্থাও যুক্ত হয়।

২০১১ সাল থেকে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কন্টুলা জানান, এখন অতীত নিয়ে খোলামেলা কথা বলার কারণ হলো সমাজে যৌনকর্মকে ঘিরে চলমান আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করা। তবে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আগামীতে আর সংসদ সদস্য পদে লড়বেন না। বর্তমানে তিনি সামাজিক কর্মী হিসেবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, যেখানে নিরাপদ যৌন শিক্ষা অন্যতম বিষয়।

তবে তাঁর এই স্বীকারোক্তি ফিনিশ সমাজে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। হেলসিঙ্গিন সানোমাত-এ প্রকাশিত এক মতামত নিবন্ধে আইনি মনোবিজ্ঞানী পিয়া পুয়োলাক্কা লিখেছেন, যৌনকর্মকে অন্য পেশার মতো স্বাভাবিকভাবে বর্ণনা করা উদ্বেগজনক। তাঁর মতে, “যৌনকর্মকে স্বাভাবিকীকরণ সমাজকে স্বাধীন বা ন্যায্য করে না। একটি সভ্য রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো এমন পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে কাউকে তার অন্তরঙ্গতা বিক্রি করতে না হয়।”

উল্লেখ্য, ফিনল্যান্ডে যৌনকর্ম বৈধ হলেও ২০০৬ সালের আইন অনুযায়ী অপ্রাপ্তবয়স্ক, মানব পাচারের শিকার কিংবা দালালির মাধ্যমে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে যৌনসেবা কেনা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।

বিজ্ঞাপন